নিজস্ব প্রতিবেদক
‘অপারেশন স্ট্রম-২৬’র বছরপূর্তি আজ
কল্যাণপুর অভিযানে ঘুরে দাঁড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
কাউন্টার টেররিজম (সিটি) ইউনিটের প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, গত বছর রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় চালানো ‘অপারেশন স্ট্রম-২৬’ ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘুরে দাঁড়ানোর অভিযান ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের টার্নিং পয়েন্ট ।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। আজ বুধবার ‘অপারেশন স্ট্রম-২৬’ অভিযানের বছরপূর্তি। কল্যাণপুরের সেই অভিযানে নয় জঙ্গি নিহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার হয় জঙ্গি রিগ্যান। এই রিগ্যানের দেওয়া তথ্যে পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন চালিয়েছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
মনিরুল ইসলাম বলেন, হলি আর্টিজান ঘটনার পর দেশে আরো জঙ্গি হামলার তথ্য আসছিল গোয়েন্দাদের কাছে। সেই সূত্র ধরেই কল্যাণপুরের অভিযানটি পরিচালিত হয়। গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য ছিল যে, জঙ্গিরা খুব দ্রুত ৩Ñ৪টি জায়গায় বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে। এ তথ্য পেয়েই জঙ্গিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে কল্যাণপুরে অভিযান চালানো হয়। তিনি আরো বলেন, ‘হলি আর্টিজনের ঘটনার পর গোটা দেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। বিদেশিরা ছাড়াও সারাদেশের মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, কি হতে পারে? এর মধ্যে কল্যাণপুরের অভিযানের মাধ্যমে আমরা আমাদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারায় মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। আমরা জঙ্গিদের আরো হামলার পরিকল্পনা রুখে দিতে সক্ষম হয়েছি। এই অভিযানের মাধ্যমে হাই প্রোফাইল কয়েকজন জঙ্গি মারা যায়। তাই এ অভিযানটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
চার্জশিটের ব্যাপারে তিনি বলেন, সম্প্রতি কল্যাণপুরে নিহত নয় জঙ্গির ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছি। এদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষ পর্যায়ে এবং যারা পলাতক আছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। শিগগিরই চার্জশিট দেওয়া হবে। পলাতক আসামি ইকবালের বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, অন্য কোনো অভিযানে ইকবাল নিহত হতে পারে।
গত বছরের ২৬ জুলাই রাজধানীর কল্যাণপুরে ‘তাজ মঞ্জিল’ বা ‘জাহাজ বিল্ডিং’ খ্যাত একটি ভবনের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের সিটিটিসি অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই নব্য জেএমবির নয় জঙ্গি নিহত হয়। পুলিশ এই অভিযানের নাম দেয় ‘অপারেশন স্ট্রম-২৬’। পুলিশের বিশেষ এই অভিযানে নব্য জেএমবির জঙ্গি নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়ে। তবে ওই আস্তানা থেকে উদ্ধার করা তথ্য-উপাত্ত ও আলামতের তদন্ত শেষে আরো নয় জঙ্গির নাম বেরিয়ে আসে। তারা হলোÑ তামিম চৌধুরী, রাকিবুল হাসান, ইকবাল, রিপন, খালিদ, মামুন, মানিক, জুনায়েদ খান, বাদল, আজাদুল ওরফে কবিরাজ। এরমধ্যে জঙ্গি আস্তানা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় রাকিবুল হাসান রিগ্যান (২২)। পলাতক আসামিদের মধ্যে রিপন, খালেদ ও জোনায়েদ খানের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ততা এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানান মনিরুল ইসলাম।
"