অলিউজ্জামান রুবেল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

  ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

খরায় চাঁপাইয়ে আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

তীব্র তাপপ্রবাহে ঝরে পড়ছে আমের গুটি * গাছে সেচ ও স্প্রে দেওয়ার পরামর্শ * উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৪ লাখ টন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে তীব্র তাপপ্রবাহে বাগানের গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। নানা কায়দা কৌশল করেও আমের গুটি ঝরা ঠেকাতে পারছেন না বাগান মালিকরা। এমন বিরূপ আবহাওয়ায় চলতি মৌসুমে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বাগান মালিকরা। তবে আশ্বাস দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, প্রয়োজনীয় পরিচর্যায় আমের গুটি ঝরা রোধ করা সম্ভব।

বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রলম্বিত শীত আর বৈচিত্র্য আবহাওয়ায় এবার গাছে মুকুল এসেছে কম। এছাড়া এবার আমের জন্য কম ফলনের বছর তথা ‘অফ ইয়ার’। তারপরও তীব্র তাপপ্রবাহে গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে আমের গুটি। সব সংকট কাটাতে ভালো ফলনের আশায় নিয়মিত বাগান পরিচর্যা করছেন তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান মতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হচ্ছে। আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৪ লাখ টন।

জেলার শিবগঞ্জের বাগান মালিক সাইদুল ইসলাম জানান, চলতি বছর তার বাগানে প্রায় ৭০ ভাগ গাছে আম আসে। কিন্তু মার্চের শেষ সপ্তাহের বৃষ্টিতে মুকুল নষ্ট হয়। তারপরেও গাছে যে পরিমাণ মুকুল ছিল, সেখান থেকে গুটি বের হয়েছে। এখন খরতাপে আমগুলো ঝরে পড়ছে।

তিনি বলেন, একদিকে খরায় পানি উঠছে না। বাড়তি খরচ করে দূর থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি এনে গাছে দিতে হচ্ছে। অন্যদিকে এবার রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের দাম বেশি। ভালো ফলনের আশায় বাড়তি পরিচর্যা করায় বেশি খরচ হচ্ছে।

শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুরের বাগান মালিক রেজাউল করিম বলেন, গাছে যে পরিমাণে আমের গুটি এসেছিল, সেগুলো যেন ঝরে না যায়, সে জন্য বাড়তি পরিচর্যা করছি। বাড়তি পরিচর্যা করেও গুটি ঝরা রোধ করতে পারছি না। এই বাগানি এবার আমের ফলনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. পলাশ সরকার বলেন, গতবার বেশি আম হওয়ায় চলতি মৌসুমকে আমের জন্য কম ফলনের বছর হিসেবে ধরা হয়েছে। যাকে বলা হচ্ছে আমের ‘অফ ইয়ার’। যার কারণে এবার মুকুল ও গুটি দুটোই কম। গুটিগুলো ঝরে না যায়, সেজন্য মাঠপর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘খরা’। এ সময় চাষিদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আমগাছের পরিচর্যা করতে হবে। গুটি ঝরা রোধে নিয়মিত গাছের গোড়ায় সেচ ও স্প্রে করতে হবে। তাহলে খরায় গুটি ঝড়া রোধ করা সম্ভব হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close