সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

  ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সৌন্দর্যের লীলাভূমি সন্দ্বীপ

একই স্থানে বসে উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। এখানে বসে পাখির মেলা। বক, চিল, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, বালিহাঁস, ময়না, টিয়া, ঘুঘুসহ আরো কত পাখি। জেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাখিরা মাছ শিকার করে। দলবেঁধে পাখিদের ওড়াউড়ি মন উদাস করে দেয়। দেখা যায় মেঘনায় রূপালি ইলিশ শিকারের মনোরম দৃশ্য। এসব দেখতে যেতে হবে সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। সেখানে রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। পশ্চিমে মেঘনা নদী আর পূর্বে সন্দ্বীপ চ্যানেলের উত্তাল ঢেউ ও দুরন্ত বাতাসে প্রাণ জুড়ায়। বৃত্তাকারের দীর্ঘ ৪১ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত আর পূর্বে গুপ্তছড়া ঘাটে আছে ম্যানগ্রোভ বন।

এখানকার প্রাকৃতিক স্থানগুলো ঘিরে পর্যটনশিল্পের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সন্দ্বীপের পশ্চিমে রহমতপুর পুরাতন স্টিমারঘাট এলাকায় মেঘনা নদীর তীরজুড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান প্রকৃতিপ্রেমীর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। এ এলাকায় মেঘনা নদীর তীর ঘিরে পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটানো গেলে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে বলে আশা করা যায়।

সন্দ্বীপে যেমন রয়েছে নৈসর্গিক রূপ, তেমনি রয়েছে নদী, পুকুর ও বিলে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু মাছের ছড়াছড়ি। এছাড়া এখানে দেশি হাঁস-মুরগি পাওয়া যায়। গরু-মহিষের দুধ, দই ও খেজুর রস পাওয়া যায়। রয়েছে নানা শাক-সবজি ও ফসলের খেত। মাঝ দরিয়ায় অপূর্ব সবুজের বেষ্টনী দর্শনার্থীর মন কেড়ে নেয়। নদীর বুকে অথই জলের মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ বন বাতাসের দোলায় কেঁপে ওঠে।

এসব বনে পাখির মেলা। বক, চিল, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, বালিহাঁস, ময়না, টিয়া, ঘুঘুসহ কত রকমের পাখি রয়েছে! জেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাখিরাও মাছ শিকার করে। দলবেঁধে পাখিদের ওড়াউড়ি মন কেড়ে নেয়। চট্টগ্রাম শহর থেকে সড়কপথে কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটে এসে স্পিড বোটে কয়েক মিনিটের পথ। সন্ধ্যার আগমুহূর্তে আকাশের রংধনু নদীর বুক জুড়ে মিতালী গড়ে তোলে। মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে প্রাণ জুড়ায়।

সন্দ্বীপে বসে উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। দেখা যায় মেঘনার ঐতিহ্যবাহী রূপালি ইলিশ কিংবা অন্য মাছ ধরার মনোরম দৃশ্য। যার জন্য দিন দিন আকৃষ্ট হচ্ছেন পর্যটকরা। তবে নিরাপত্তাসহ সরকারি হোটেল-মোটেলের কোনো সুযোগ-সুবিধা না থাকায় পর্যটকদের পোহাতে হচ্ছে বিড়ম্বনা। যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনার অভাবে এ উপকূলের সম্ভাবনাময় পর্যটনের বিকাশ ঘটছে না। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ সুযোগ-সুবিধা দিলে সন্দ্বীপকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা যায়।

স্থানীয়দের দাবি, সন্দ্বীপকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হলে বদলে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য। পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটলে তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান। অর্থনৈতিক উন্নয়নেও এগিয়ে যাবে এ অঞ্চল। সরকার সন্দ্বীপকে পর্যটন স্পট করার উদ্যোগ নিলে এ এলাকায় প্রচুর মানুষের সমাগম হবে। সেই সঙ্গে এলাকার অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে।

সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা বলেন, ‘সন্দ্বীপকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে সংসদে উপস্থাপন করেছি। সন্দ্বীপে এখন অনেকগুলো উন্নয়ন দৃশ্যমান। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ এসেছে। ব্লক বেড়িবাঁধ হচ্ছে, রাস্তাঘাটের অনেক উন্নতি হয়েছে। পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে উঠতে এখন আর বাধা নেই।’

বাংলাদেশের যেকোনো জায়গা থেকে সড়কপথে সন্দ্বীপ যাওয়া যাবে। ঢাকা থেকে যেতে চলে প্রথমে চট্টগ্রাম শহরে যেতে হবে। সেখান থেকে সড়কপথে কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটে এসে স্পিড বোটে কয়েক মিনিটের পথ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close