আকবর হোসেন, লাকসাম (কুমিল্লা)

  ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাইস্কুলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

আজকের শিক্ষার্থীরাই গড়বে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘শিক্ষকরা জাতির মেরুদণ্ড, জাতি গড়ার কারিগর; শিক্ষকতা একটি মহান ও মহৎ পেশা। আজকের শিক্ষার্থীরাই গড়বে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ, অর্থাৎ ২০৪১ সালের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।’ তিনি বলেন, ‘আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ছিলেন। এক দিন আমি বাড়ি থেকে গাড়িতে আসার সময় ওই শিক্ষককের সঙ্গে দেখা হয়। তাকে চিনতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে স্যারকে পা ধরে সালাম করেছি। তখন আমার খুব গর্ববোধ হয়েছে- এই শিক্ষক আমাকে পড়িয়েছেন।’

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আরো বলেন, ‘শিক্ষকদের সব সময় মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই শিক্ষকদের বলব, আপনারা এমন কাজ করবেন যাতে আপনাদের মতো মর্যাদাশীল ব্যক্তিদের ছাত্রছাত্রীরা সারাজীবন মনে রাখে। প্রিয় শিক্ষকদের বলব, আপনারা মানুষ গড়ার কারিগর। দয়া করে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন, তখন আপনি ছাত্রছাত্রী ও সমাজের কাছে আইডল হিসেবে পরিচিত হবেন।’

গত শনিবার বিকেলে কুমিল্লার লাকসাম ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাইস্কুলের ৫০ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীর প্রজন্ম এগিয়ে যাবে। আজকের শিক্ষার্থীরাই গড়বে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ, অর্থাৎ ২০৪১ সালের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। শিক্ষার্থীদের মাঝে দেশপ্রেম, মানবতাবোধ জাগ্রত করতে শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সুশিক্ষার বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন এবং শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন করেছেন। সরকারের এই উদ্যোগকে সফল করতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর উচিত ভালোভাবে পড়াশোনার মাধ্যমে নিজেকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। সঠিক পরিচর্যা পেলে নতুন প্রজন্মের সন্তানরাই এক দিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বে।’

মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে, গ্রামীণ অবকাঠামো ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আমার নির্বাচনী এলাকা লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে অসংখ্য রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। যখন সময় পাই, তখন লাকসাম-মনোহরগঞ্জের উন্নয়নকাজগুলো তাকিয়ে দেখলে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজে নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

আমার প্রিয় বিদ্যাপীঠ নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজে সেদিন ১০ মিনিটের জন্য গিয়েছিলাম, তখন আমার কাছে ভালো লেগেছে। আমি আজকে (শনিবার) ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাইস্কুলের অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আমার কাছে ভালো লাগছে। আমি বিশ্বাস করি, এই স্কুল একসময় গর্বিত স্কুল হবে। সব অভিভাবককে অনুরোধ করব, ছেলেমেয়েদের প্রতি আপনাদের নজর রাখতে হবে।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আবুল ফয়েজ। লাকসাম পৌরসভা মেয়র ও বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক মো. আবুল খায়েরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাবিবুর রহমান, লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস ভুঁইয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী, সহকারী পুলিশ সুপার (লাকসাম সার্কেল) সোমেন মজুমদার, গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজালা রানী চাকমা, কুমিল্লা জেলা (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা ইফতেখার আলী, জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার নাসারুল্লাহ, লাকসাম উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম হিরা, লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন, মনোহরগঞ্জ থানার ওসি শাহজাহান কবিরসহ ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এদিকে গত রবিবার লাকসাম পৌরসভা অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসন ও শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ১৪৩১ নববর্ষ উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। পরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তৃতীয় লিঙ্গ (হিজরা) সম্প্রদায়ের জন্য নির্মিত পাকাঘরগুলো পরিদর্শন করেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close