মংক্যচিং মারমা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২৪

ইবিতে ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমের বাইরে সহপাঠীদের সঙ্গে আরামদায়ক এবং মনোরম পরিবেশে সময় কাটানোর একটি স্থান হচ্ছে ক্যাফেটেরিয়া। এক কাপ চায়ের চুমুকে নতুন বন্ধুদের সঙ্গে বসে যেমন আড্ডা দেওয়া হয় তেমনি নতুন বন্ধু ও সম্পর্ক স্থাপন করতেও ভূমিকা রাখে ক্যাফেটেরিয়া। ক্যাম্পাস জীবনের সবচেয়ে মধুর আলাপও জমে ক্যাফেটেরিয়ার খাবার টেবিলে। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) এই চিত্রের বিপরীত। এক বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বাধ্য হয়েই খেতে হচ্ছে ক্যাম্পাসের আশপাশের দোকান থেকে বেশি দামে মানহীন খাবার। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে ক্যাম্পাস জীবন কাটাচ্ছেন সহস্রাধিক শিক্ষার্থী।

জানা যায়, করোনা-পরবর্তী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকালীন দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় ২০২৩ সালের ১২ মার্চ ক্যাফেটেরিয়া চালাতে অপারগতা প্রকাশ করে অব্যাহতিপত্র দেন সাবেক ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম কলম। দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত ২৭ আগস্ট আবারও চালু হয় ক্যাফেটেরিয়াটি। চালু হওয়ার মাস না পেরোতেই আবারও ম্যানেজার পদ থেকে ইস্তফা দেন নতুন ম্যানেজার রাজিব মন্ডল। সেই থেকে এখনো বন্ধ আছে ক্যাফেটেরিয়াটি।

গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে দেখা যায়, ক্যাফেটেরিয়ার দরজায় তালা ঝুলানো। এলোমেলো ও অপরিষ্কার অবস্থায় ধুলো জমে আছে ক্যাফেটেরিয়ার চেয়ার টেবিলে।

ক্যাফেটেরিয়াটির সাবেক ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম কলম বলেন, ক্যাফেটেরিয়া চালাতে গেলে আমাদের কমপক্ষে ১০ জন কর্মচারী লাগে। কর্মচারীর ছোট-বড় মিলে প্রতিদিন আমার ২ হাজার ৫০০ টাকা বিল আসে। এরপর এখানে আমি বসি, আমার ছেলে বসে, আমার স্ত্রীও বসেন এরপরও যদি মাস শেষে ২০ হাজারের মতোও লাভ না আসে তাহলে তো আমার আর ক্যাফেটেরিয়া চালানো সম্ভব না। এভাবে লসে আছি, স্যারদের জানিয়েছি, তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ থাকা মোটেও ভালো নয়। শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষার ফাঁকে আড্ডা দেওয়ার অন্যতম জায়গা এটি। তা ছাড়া দুপুর ও সকালের খাবার ও নাশতা অনেকেই এখানে খেয়ে থাকেন। এক বছর ধরে ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ থাকার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যায় পড়তে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটি জায়গা যদি দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকে, তবে তা দুঃখজনক। এই বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন এ বিষয়ে বলেন, ক্যাফেটেরিয়া একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের বিকল্প যে ব্যবস্থা, শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সেটি এখানেই খোঁজেন। কিন্তু খাবারের মানের দিকটি বিবেচনা করে আমরা যে নীতিমালা অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করি তাতে সাড়া পাওয়া যায় না। তবে লোক পাওয়া যাচ্ছে না বলে যে আমরা থেমে যাব এমন নয়।

টিএসসিসির পরিচালক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল বলেন, একটি ক্যাফেটেরিয়া তো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। অনেক প্রচেষ্টার পর আমাদের ক্যাফেটেরিয়া চালু করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে আমরা খাবারের মান ও দাম নির্ধারণ করে দেই। কিন্তু ভর্তুকি না থাকায় যারা ক্যাফেটেরিয়া চালাতে আসেন তারা লাভের মুখ না দেখার কথা বলে চলে যান। এখন চালানোর মতো ম্যানেজার না থাকলে তো আমাদের করার কিছু থাকে না। এখন অন্য কোনো উপায়ে ক্যাফেটেরিয়া চালু করা যায় কি না সেই প্রচেষ্টা চলমান আছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close