জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)
কেশবপুরে রমরমা মাটি-বাণিজ্য
যশোরের কেশবপুরে মির্জানগর গ্রামে পুকুর খননের নামে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে চলছে লাখ লাখ টাকার বালু, মাটির রমরমা বাণিজ্য। বালু উত্তোলন করায় আশপাশের বসতবাড়ি ধসে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় ভুগছেন এলাকাবাসী। খনন কাজ বন্ধে পুকুর পাড়ের বাসিন্দা কেষ্টপদ দে যশোর জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাতবাড়িয়া-সরসকাটি সড়কের পাশে মির্জানগর বালির মাঠ এলাকার বাসিন্দা প্রণব কুমার দে পুরাতন পুকুর পুনঃখননের জন্য গত ২৩ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেন। তিনি সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সম্প্রতি প্রণব কুমার দে এলাকায় প্রচারণা চালান জেলা প্রশাসক তাকে পুকুর খননের অনুমতি দিয়েছেন। প্রণব কুমার দে মোটা অঙ্কের টাকায় পুকুরের মাটি বিক্রি করেন একই গ্রামের বালু, মাটি ব্যবসায়ী আবদুল জলিলের কাছে। তিনি এস্কাভেটর মেশিন দিয়ে ১৪ মার্চ থেকে পুকুরের মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটাসহ বসতভিটা ভরাটের কাজে বিক্রির রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫/৭টি মাটিবাহী ট্রাক্টরে করে গ্রামীণ সড়ক দিয়ে বহন করা হচ্ছে এ পুকুরের মাটি। পুকুর মালিক সম্পূর্ণ গায়ের জোরে ১০/১২ ফুট গভীর করে মাটি কাটছেন। যে কারণে কেষ্টপদ দের পরিবারসহ ভাঙন আতঙ্কে রাত্রিযাপন করছেন পুকুরের আশপাশের বাসিন্দারা।
মাটি বহনে হুমকিতে পড়েছে গ্রামীণ সড়ক। যে কারণে খনন কাজ বন্ধে এলাকার কেষ্টপদ দে গত ১৫ মার্চ যশোর জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর অনুলিপি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার কাছে।
পুকুর মালিক প্রণব কুমার দে জানান, দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় পুকুর পাড়ের মাটি ধুয়ে পুকুরটি ভরাটের উপক্রম হয়েছে। পুকুরটি গোসলসহ মাছ চাষের অনুপযোগী হওয়ায় খননের প্রয়োজন। পুকুর খননের স্বার্থে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন আবদুল জলিল।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুজ্জামান বলেন, ওই পুকুরের মাটি কাটা বন্ধসহ সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলসহ খনন কাজ বন্ধে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, তিনি দুসপ্তাহ প্রশিক্ষণে থাকায় এলাকায় মাটি কাটা শুরু হয়েছে। অচিরেই এটা বন্ধ করা হবে।
"