নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বললেন প্রধানমন্ত্রী

চাইলে সংবাদিকরা ভাড়ার টাকায় ফ্ল্যাট পাবেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সংবাদপত্রের পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কিন্তু এটাকে বালখিল্যভাবে ব্যবহার করা উচিত নয় এবং সবারই এ ব্যাপারে সচেতন থাকা উচিত। দেশের জন্য কল্যাণজনক হবে এমন ভূমিকাই গণমাধ্যমের পালন করা উচিত। আর আমার বিরুদ্ধে কে কী লিখছে সে সম্পর্কে আমি সামান্যই চিন্তা করি। আমি মনে করি, যেকোনো কাজ এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আমার নিজের ওপর আস্থা রয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চলি। গতকাল বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনাজনিত আহত এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। একটা কথা আছে যে স্বাধীনতা ভালো তবে তা বালকের জন্য নয়। বালখিল্য ব্যবহার যাতে কেউ না করে সেদিকেও দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যেটা দেশের কল্যাণে কাজে লাগবে আমি আশা করি আপনারা সেটা করবেন। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে কাজ করে এসেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কেউ বলতে পারবে না যে কারো গলা টিপে ধরেছি, কারো মুখ টিপে ধরেছি অথবা কাউকে বাধা দিয়েছি, দিইনি, দিই না। বরং সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যা যা করা দরকার আমরা করেছি।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ‘সাংবাদিক সহায়তা ভাতা ও অনুদান নীতিমালা-২০১২’ প্রণয়ন এবং অসুস্থ, অসচ্ছল, আহত এবং প্রয়াত সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো সরকার সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। এ কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন-২০১৪’ প্রণয়ন করে একটি ট্রাস্টি বোর্ড করা হয়েছে। এই ট্রাস্ট থেকে এ দিন সারা দেশের ১১৩ জন সাংবাদিককে ৮৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

আর গত ৮ বছরে ১ হাজার ৩৯৬ জন সাংবাদিককে মোট ১০ কোটি ৭ লাখ টাকা সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেওয়ার পাশাপাশি সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে ২০ কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা দেন।

পক্ষে-বিপক্ষে কে কি লিখল তা নিয়ে চিন্তা করেন না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি চিন্তা করি, আমি যেটা করছি আমার আত্মবিশ্বাসটা আছে কিনা। আমি সঠিকটা করছি কিনা। আমি আমার আত্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করেই চলি। তবে সংবাদপত্রের সঙ্গে পারিবারিক ও ব্যক্তিগতভাবে যেসব সময়ই একটি সম্পর্ক ছিল, সে কথাও তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আন্দোলন সংগ্রাম করতে যেয়ে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। প্রেস ক্লাবে যাওয়া, ডালপুরি খাওয়া। সেটাও একটা সম্পর্ক ছিল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সংবাদপত্রের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি যে সংবাদপত্রের লোক ছিলেন সেটা কিন্তু তার আত্মজীবনীতে স্পষ্ট লেখা আছে। সেদিক থেকে আপনারা আমাকে যদি আপনাদের পরিবারের একজন মনে করেন, আমি খুশি হব। বেতন-ভাতাসহ সাংবাদিকদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের আবাসন সমস্যার সমাধানে বর্তমান সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যখন ন্যাম ফ্ল্যাট করেছি তখন বলেছিলাম কিছু ফ্ল্যাট থাকবে, যেটা হায়ারপারচেজে সাংবাদিক, শিল্পী, সাহিত্যিকÑ তারা নিতে পারবেন। যেকোনো কারণেই হোক সেটা আর হয়নি।

আমরা এখন কিছু ফ্ল্যাট করছি, সামান্য টাকা দিয়ে, কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করে এই ফ্ল্যাটের মালিক হতে পারবেন। যারা চান তারা হতে পারবেন। ভাড়া থেকেই মূল্যটা পরিশোধ হবে। প্রতি মাসে ভাড়া হিসেবে যেটা, সেটা মূল্য হিসেবে ধরা হবে। সেভাবে আমরা ফ্ল্যাট দিতে পারব।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, তথ্যপ্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্য্য, সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন তথ্য সচিব আবদুল মালেক ও বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলমগীর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close