নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

নোয়াখালীতে বিমানবন্দর দাবিতে মানববন্ধন

নোয়াখালীতে পূর্ণাঙ্গ একটি বিমানবন্দর স্থাপনের দাবিতে গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নোয়াখালী ইয়ুথ ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধন হয়েছে।

ফরাজী হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এম মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং নোয়াখালী ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা মোজাম্মেল হোসেন ও নোয়াখালী ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি হামিদ রনির যৌথ সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন গবেষক ও উন্নয়নকর্মী মো. আল মামুন, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মনিরুল ইসলাম মনির, প্রতিদান ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাহিদ ভুঁইয়া, ব্যবসায়ী ও মানবাধিকারকর্মী দেলোয়ার হোসেন মিলন, দৈনিক বাংলার জাগরণ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মহিউদ্দিন চৌধুরী লিটন, নোয়াখালী জার্নালিস্ট ফোরাম এনজেএফের ক্রীড়া সম্পাদক ইসমাইল হোসেন টিটু, সদস্য মিরাজ, এ এইচ এম হাসান, দেশি এয়ার ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশ্রাফুল আলম টিটু।

এছাড়া ডিবিসি নিউজের সাইফুল ইসলাম, মোহনা টিভির মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, ইউনাইটেড অম্বর নগর স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি আজাদ হোসেন তুহিন, দৈনিক লাখো কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি রিপন সালাউদ্দিন, সামাজিক সংগঠক শাহজাহান মিজি, আজাদ মিজিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নোয়াখালী সদর উপজেলার সোনাপুরের দক্ষিণে চর শুল্লুকিয়ায় পরিত্যক্ত এয়ারস্ট্রিপকে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দরে রূপান্তরের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে দীর্ঘ একযুগ ধরে। পরপর তিনজন বিমান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সরেজমিন পরিদর্শনের পরও ভাগ্য খোলেনি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নোয়াখালী বিমানবন্দরের। প্রবাসী অধ্যুষিত বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রায় ১ কোটি মানুষের বসবাস, ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প, স্বর্ণদ্বীপের সেনা প্রশিক্ষণ ক্যাম্প, সম্ভাবনাময়ী নিঝুমদ্বীপ, বৃহত্তর নোয়াখালীর বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, দক্ষিণে শিল্পাঞ্চলসহ অসংখ্য ছোট ও মাঝারি ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে। এসব সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে নোয়াখালীতে দ্রুত বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা জরুরি।

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নোয়াখালী সফরেও বিমানবন্দরের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রবাসীদের কথা চিন্তা করে নোয়াখালী এয়ারস্ট্রিপকে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দরে রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেয়।

২০১৭ সালে ১ আগস্ট নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তৎকালীন বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত স্থানটিতে একটি রানওয়েসহ ছোট টার্মিনাল আছে। জনস্বার্থ বিবেচনা করে নোয়াখালী সদর উপজেলায় অব্যবহৃত এয়ারস্ট্রিপে একটি নতুন বিমানবন্দর স্থাপনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। বিমানমন্ত্রীও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দেন।

এরপর ২০১৮ সালের ২২ জুলাই তৎকালীন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল এবং ২০২২ সালের ১৪ জানুয়ারি সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী নোয়াখালী বিমানবন্দর এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে অচিরেই নোয়াখালী বিমানবন্দরের কাজ শুরু হওয়ার আশ্বাস দিলেও আজও প্রকল্পটি অজানা কারণে ‘লাল ফিতায়’ বন্দি হয়ে আছে।

সরকার নোয়াখালীতে প্রস্তাবিত বিমানবন্দরটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে হস্তান্তর করেছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ২০২২ সালের ১-৫ মার্চ নোয়াখালীতে প্রস্তাবিত বিমানবন্দরে অবস্থান করে তাদের হেলিকপ্টার উড্ডয়ন করে। এরপর থেকে তারা স্থায়ীভাবে এখান থেকে তাদের হেলিকপ্টার উড্ডয়নে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। পুরোনো এয়ারস্ট্রিপকে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দরে রূপ দিলে দেশের অর্থনীতিতে তা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

সব কিছু ঠিক থাকার পরও নোয়াখালীতে কেন বিমানবন্দর হচ্ছে না! প্রবাসী অধ্যুষিত এই অঞ্চলে দ্রুত বিমানবন্দর করার দাবি জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা ব্যক্তিরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close