উজ্জ্বল নাথ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম)

  ০৮ মে, ২০২৪

চট্টগ্রামের হাটহাজারী

হালদায় নমুনা ডিম ছাড়ছে মা মাছ

চার শতাধিক নৌকা নিয়ে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে

হাটহাজারীর গড়দুয়ারা নয়াহাট, পাতাইজ্জ্যার টেক, সোনাইমুখ, মাছুয়াঘোনা, আজিমারঘাটসহ বিভিন্ন পয়েন্টে নমুনা ডিম পেয়েছেন সংগ্রহকারীরা। মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে কার্পজাতীয় (রুই, কাতল, মৃগেল ও কালবাউস) মা মাছগুলো নমুনা ডিম ছাড়তে শুরু করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে নদীর কয়েকটি পয়েন্টে নমুনা ডিম ছাড়তে শুরু করে মা মাছ। এ সময় নৌকাপ্রতি ৫০০ থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। পরিবেশ অনুকূল থাকলে রাতে পুরোদমে কার্পজাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে বলে ডিম আহরণকারীরা জানান। চার শতাধিক নৌকা ও সরঞ্জাম নিয়ে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে অবস্থান করছেন। হালদার গড়দুয়ারা নয়াহাট, পাতাইজ্জ্যার টেক, সোনাইমুখ, মাছুয়াঘোনা, আজিমারঘাট, নাপিতেরঘাট, কুমারখালী, মইশকরম, চইল্যাখালী, রামদাস মুন্সীরহাট, মদুনাঘাট, ছায়ারচড়সহ নদীর বিভিন্ন স্থানে নমুনা ডিম পাওয়া গেছে বলে গণমাধ্যমকে জানান একাধিক ডিম সংগ্রহকারী।

গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের কারণে হালদা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খাল, ছড়ায় পাহাড়ি ঢল বৃদ্ধি পেয়েছে। শুরু হয়েছে আমাবস্যা। এই জো ১০ মে পর্যন্ত চলবে। ইংরেজি এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত মৌসুম। মৌসুমের আমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হলে নদীতে ঢলের নামলে মাছ ডিম ছাড়ে। কিন্তু দীর্ঘদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গত এপ্রিলে মাছ নদীতে ডিম ছাড়েনি।

গত কয়েকদিন থেকে দিনের বেলায় ও রাতে হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান ও পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি বিভিন্ন স্থানে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এখন মা মাছের ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুম। বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হওয়ায় পরিবেশ শীতিলতার কারণে নদীতে ঢল থাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে নদীতে মাছ নমুনা ডিম ছাড়তে শুরু করে। ডিম সংগ্রহকারী মো. হোসেন বলেন, ভোর সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার দিকে মদুনাঘাটের মুখ এলাকায় কয়েকজন ডিম সংগ্রহকারী অল্প পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করেন। খবর পেয়ে শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী নদীতে নামলেও আর পাওয়া যায়নি। তবে দুপুরে জোয়ারের সময় কাটাখালী মুখসহ কয়েকটি স্থানে আবারও নমুনা ডিম পাওয়া যায়। তবে পরিমাণ সকালের চেয়ে বেড়েছে।

ডিম সংগ্রহকারী শফিক বলেন, পরিবেশ অনুকূল থাকলে মঙ্গলবার রাতে পুরোদমে ডিম ছেড়ে দিতে পারে বলে তিনি আশা করেন। হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ভোর ৬টায় হালদা নদীর রাউজান অংশের মইশকরম এলাকার চইল্যাখালীতে ডিম সংগ্রহকারী পাকিরাম দাশ, হরিরঞ্জন দাশ, সন্তোষ দাশ, সুজিত দাশ ও সুনীল দাশ ১১টি নৌকার মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ করেন। প্রতিটি নৌকায় গড়ে দুই থেকে আড়াই বালতি করে ডিম সংগ্রহ করেছেন বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ বি এম মশিউজ্জামান জানান, হালদায় মা মাছের ডিমের নমুনা ছেড়েছে। তবে পরিবেশ অনুকূল থাকলে রাতে ডিম ছাড়তে পারে। এদিকে নদী থেকে আহরিত ডিম থেকে রেণু ফোটানোর জন্য সরকারি হ্যাচারিগুলো এরই মধ্যে সংস্কার ও প্রয়োজনীয় উন্নয়ন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close