নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৮ মে, ২০২৪

শিবনারায়ণের কর্নিয়ায় আলো দেখলেন দুজন

জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত শিবনারায়ণ দাশের দান করা চোখের কর্নিয়ায় আলো ফিরে পেয়েছেন মশিউর রহমান ও আবুল কালাম নামে দুই ব্যক্তি। চোখের আলো পেয়ে তারা শিবনারায়ণ দাশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

গত ১৯ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) মারা যান শিবনারায়ণ দাশ। তার মৃত্যুর পর বিএসএমএমইউ ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষু ডোনেশন সোসাইটি তার চোখ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করে। এরপর রংপুরের মশিউর রহমান এবং চাঁদপুরের আবুল কালাম নামের দুজনের চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করে বিএসএমএমইউর চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ ও অন্য সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান।

গত সোমবার দুপুরে কর্নিয়া দান ও প্রতিস্থাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানান।

এ সময় বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক বলেন, দেশের মানুষের চোখের কর্নিয়া দান করার ব্যাপারে কুসংস্কার কাজ করে। মানুষ মনে করে পুরো চোখ উঠিয়ে ফেলবে, চেহারা বিকৃত হবে, যা আত্মীয়-স্বজনরা মেনে নিতে পারে না। কিন্তু বিষয়টা এমন নয়। চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করতে চেহারা বিকৃত হয় না। মাত্র ১০ মিনিট সময়ে কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়। তবে মানুষ এখন ধীরে ধীরে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

উপাচার্য আরো বলেন, শিবনারায়ণ দাশ কর্নিয়া ও তার দেহ দান করে গেছেন। এক চোখের কর্নিয়া চাঁদপুরের মশিউর রহমানের চোখে প্রতিস্থাপন করেছি। অন্য চোখের কর্নিয়া রংপুরের আবুল কালামের চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। দান করা কর্নিয়ায় এখন এ দুই ব্যক্তি চোখে আলো ফিরে পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু বলেন, অনেক বড় বড় মানুষ মরণোত্তর চক্ষু দানের জন্য অঙ্গীকার করেছেন। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। এতে করে অসংখ্য মানুষ মরণোত্তর চক্ষু দানে উৎসাহিত হবেন। ডা. রাজশ্রী দাশ বলেন, শিবনারায়ণ দাশ দেশকে একটি লাল-সবুজের পতাকা দিয়েছেন। মৃত্যুর পর দেহ ও চোখ দুটিও দান করেছেন। মরণোত্তর চক্ষু দানে মহত্ত্ব আছে। ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান বলেন, দেশে কর্নিয়া দান নিয়ে এখনো ধর্মীয় একটা প্রতিবন্ধকতা আছে। ইরান-সৌদি আরবে পাঁচ থেকে ছয় হাজার কর্নিয়া প্রতিস্থাপন হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এক থেকে দেড় হাজার পর্যন্ত কর্নিয়া প্রতিস্থাপন হয়। এ সংখ্যাটা খুবই কম।

সংবাদ সম্মেলনে চোখের আলো ফিরে পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন মশিউর রহমান ও আবুল কালাম। এ সময় মশিউর রহমান বলেন, আগের থেকে ভালো দেখতে পাচ্ছি। আমার চোখে সমস্যা ছিল জন্ম থেকেই। শিবনারায়ণ দাশের পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই। চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ভালো লাগছে। দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি ফিরে পেলে দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close