প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ
গার্মেন্ট খাতের কপাল খুলবে বাড়বে পোশক রফতানি
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুরু হয়েছে বাণিজ্যযুদ্ধ। এতে কপাল খুলে যাবে বাংলাদেশের গার্মেন্টশিল্পের। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি বাড়বে তৈরি পোশাকের। দামও মিলবে ভালো। চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক তৈরি ও বিক্রেতাদের সংগঠন ইউএস ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (ইউএসএফআইএ) পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে। মার্কিন বিভিন্ন বহুজাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড ও বিক্রেতা, নীতিনির্ধারক এবং বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে নেওয়া তথ্যের মাধ্যমে ওই জরিপের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দফতরের বরাত দিয়ে এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই খবর প্রকাশ করেছে একাধিক মার্কিন সংবাদপত্র।
এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৭ শতাংশই মনে করেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে চীন থেকে পোশাক আমদানি কমে যাবে। ফলে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি রেকর্ড মাত্রায় বাড়বে। ‘ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বেঞ্চমার্কিং স্টাডি-২০১৮’ নামে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন শিল্পগুলোতে পোশাক সরবরাহকারী দেশের তালিকায় গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সপ্তম, যা এ বছর হয়েছে পঞ্চম। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, জরিপের উত্তরদাতারা চীনের বিকল্প হিসেবে আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি করতে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এখনই পোশাক আমদানিতে শীর্ষ স্থান থেকে চীনকে সরানো সম্ভব নয়। কিন্তু এশিয়ার অন্য অনেক সরবরাহকারীর চেয়ে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পণ্য অনেক বেশি গুরুত্ব পাবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপের অর্ধেক উত্তরদাতা মনে করেন, ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি আরো বাড়বে, যা ২০১৭ সালে কাপড় আমদানির তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি হতে পারে, বাড়তি দামও পাবেন বাংলাদেশের উৎপাদকরা। তবে বাংলাদেশের ‘কমপ্লায়েন্স ঝুঁকি’ উদ্বেগের কারণ হিসেবে এখনো রয়ে গেছে এবং এটাকে বড় ধরনের দুর্বলতা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের গার্মেন্টশিল্পের সামাজিক দায়িত-সংক্রান্ত সমস্যাগুলো শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও জনগণের মনযোগের কেন্দ্রে রয়েছে। এসব গার্মেন্ট কারখানার নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি শ্রমিকদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন-সংক্রান্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে উদাসীনতা রয়েছে। ইউএসএফআইএর প্রেসিডেন্ট জুলিয়া হজেস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার চীনের মধ্যকার ক্রমবর্ধমাণ বাণিজ্যযুদ্ধ এই মুহূর্তে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ও বিক্রেতাদের জন্য ?‘অনিশ্চয়তা’ তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংরক্ষণবাদী বাণিজ্যনীতি ২০১৮ সালেও যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন কোম্পানিগুলোর জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবেই থাকবে। জরিপের উত্তরদাতাদের ৬০ ভাগই বিষয়টিকে এ বছর ব্যবসায়ের শীর্ষ পাঁচ চ্যালেঞ্জের মধ্যেই রেখেছেন। তবে জুলিয়া বলেন, ‘সবকিছুই নেতিবাচক নয়। আমাদের উত্তরদাতারা পাঁচ বছরের শিল্পের অবস্থা নিয়ে আরো বেশি আশাবাদী। প্রথমবারের মতো শতভাগ মানুষ জানিয়েছেন, তারা আগামী পাঁচ বছরের জন্য আরো বেশি কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।’
"