টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে ঘরের মাঠে দুটি ভেন্যুতে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচও হবে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। তবে সিরিজের শেষ ২টি ম্যাচ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলবে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে।

২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে মুখোমুখি হওয়া নিজেদের সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। তবে ওই সিরিজ হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাকফুটে আছে বলে মনে করেন না টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে শান্ত বলেন, ‘এ ফরম্যাটে বড় বা ছোট দল বলে কিছু নেই। আপনি যেমন বলেছেন উগান্ডার কাছে সিরিজ হেরেছে জিম্বাবুয়ে, কিন্তু কিছুদিন আগে শ্রীলঙ্কার মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়েছে তারা। এজন্য এ ফরম্যাটে পার্থক্য খুব বেশি নয়।’

শান্ত আরো বলেন, ‘এ সিরিজ দিয়ে আমরা কীভাবে তৈরি হচ্ছি, এটাই গুরুত্বপূর্ণ। দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ। ফলে এ সিরিজটি আমাদের প্রস্তুতির বড় মঞ্চ। গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা কীভাবে নিজেদের প্রস্তুত করব এবং কীভাবে আমরা নিজেদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারব। আমি বলতে পারি, এ সিরিজ অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। কারণ জিম্বাবুয়ে অনেক ভালো দল।’ পূর্ব আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ের কাছে সর্বশেষ সিরিজ হেরে গেলেও দুদলের মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০ বারের মোকাবিলায় টাইগাররা ১৩টি জিতেছে এবং ৭টিতে হেরেছে।

দলের দুই সেরা তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে ছাড়াই সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে ম্যাচ খেলার ফিটনেস অর্জনের জন্য চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) অংশ নিয়েছেন সাকিব। চলতি ইন্ডিয়ার প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মাঝপথে আজ দেশে ফিরছেন চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলা মুস্তাফিজ। কিন্তু ক্লান্তির বিষয়টি মাথায় রেখে ফিজকে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ খেলাতে রাজি নন নির্বাচকরা। শান্ত বলেন, ‘আমরা সিরিজ জিততে চাই এবং এটাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। একইসঙ্গে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। কিন্তু এমনটা নয়, আমরা বড় ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার নেই। কারণ এ দলে যে ১৫ জন খেলোয়াড় আছে, তারা জিম্বাবুয়েকে হারানোর সামর্থ্য রাখে। আমি মনে করি, এ সিরিজ দিয়ে আমাদের ভুলগুলো বুঝতে পারব এবং ভুল সংশোধন করার জন্য আমাদের সেখানেই বেশি নজর দেওয়া উচিত।’

বড় দলগুলোর বিপক্ষে সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পারলেও শেষ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। তবে ২০২২ সালে ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারাতে যেভাবে খেলেছিল, সেভাবে আবারও জ্বলে ওঠার প্রত্যাশা জিম্বাবুয়ের। ওয়ানডে সিরিজে জয় পেলেও ২০০১ সালের পর বাংলাদেশের মাটিতে সাদা বলের ফরম্যাটে কোনো সিরিজ জিততে পারেনি জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা বলেন, ‘সিরিজ জিতে দেশে যাওয়াটা হবে দারুণ স্মৃতি। আমি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি না। কিন্তু আমরা এখানে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে এসেছি এবং আমরা এ সিরিজের জন্য সত্যিই ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এখানে এসেছি। আমরা বাংলাদেশে জিততেই এসেছি।’

বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, তওহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, শেখ মাহেদি, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, পারভেজ হোসেন ইমন, তানভীর ইসলাম, আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

জিম্বাবুয়ের দল : সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ফারাজ আকরাম, ব্রায়ান বেনেট, রায়ান বার্ল, জোনাথন ক্যাম্পবেল, ক্রেগ আরভিন, জয়লর্ড গাম্বি, লুক জঙ্গি, ক্লাইভ মাদান্দে, তাদিওয়ানাশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ব্লেসিং মুজারাবানি, এন্সলি এন্দলোভু, রিচার্ড এনগারাভা ও সিন উইলিয়ামস।

"