প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১০ জুন, ২০১৮

জঙ্গি দমনে ব্যর্থ হলে পাকিস্তানের নাম কালো তালিকায়

জঙ্গিদের দমনে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে কি বিশ্বাস করা যায়? এ প্রশ্ন অনেক দেশের, অনেক গবেষকের। সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে দমন করতে পাকিস্তানকে আরো বেশি তৎপর হতে হবে, তা না হলে আন্তর্জাতিক কালো তালিকায় নাম উঠবে দেশটির। পাকিস্তানের ওপর এ রকমই চাপ দিচ্ছে জঙ্গি অর্থায়নের ওপর নজর রাখে এমন এক বৈশ্বিক নজরদারি সংস্থা। বিবিসি গতকাল শনিবার এ খবর জানায়।

লাহোর থেকে সাংবাদিক ও লেখক আহমেদ রশিদ এক প্রতিবেদনে লেখেছেন, সন্ত্রাসবাদের জন্য অর্থ জোগানদাতাদের ওপর নজর রাখেÑ এমন এই বৈশ্বিক নজরদারি প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন ট্রাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)। চলতি মাসের শেষ দিকে প্রতিষ্ঠানটি এমন একটি বৈঠকে বসবে যেখানে পাকিস্তানকে ‘ধূসর তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে; যা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথে প্রথম ধাপ। পাকিস্তান যদি সন্ত্রাস নির্মূল না করে তাহলে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে এবং তার পরিণামে আরোপ করা হতে পারে অত্যন্ত কঠোর সব শাস্তিমূলক পদক্ষেপ। এই বৈঠকে পাকিস্তানকে দুটি গোষ্ঠীর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রকৃত অভিযান চালানোর সাক্ষ্য-প্রমাণ দিতে হবে। তা না হলে দেশটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধূসর তালিকায় চলে যাবে।

এ দুটি গ্রুপ হচ্ছে লস্কর-ই-তাইয়েবার নেতৃত্বাধীন গ্রুপগুলো, যারা সীমান্তের ওপারে ভারতের লক্ষ্যবস্তুগুলোর ওপর আক্রমণ চালায়। আরেকটি হচ্ছে তালেবান ও হাক্কানি গ্রুপের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীগুলো, যারা আফগান ও মার্কিন বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়।

বহু দশক ধরে সন্দেহ করা হচ্ছে যে, পাকিস্তানের সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো উগ্রপন্থি বিভিন্ন গ্রুপকে নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছে; যারা রাষ্ট্রের ভারতবিরোধী এজেন্ডা বা আফগানিস্তানে তাদের তালেবান মিত্রদের সমর্থন দেয়।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো দেশগুলো বহুবার প্রভাব খাটিয়ে বা হুমকির মাধ্যমে চেষ্টা করেছে; যেন ইসলামাবাদ এ গ্রুপগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু পাকিস্তান বরাবরই এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে এবং সেই চাপকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। পাকিস্তান সরকার এবং সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে বলেছে, পাকিস্তানি উগ্রপন্থি গ্রুপের আক্রমণে নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরাই বরং ব্যাপক প্রাণহানির শিকার হয়েছে এবং এসব গ্রুপ আফগানিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে আক্রমণ চালাচ্ছে। এর মধ্যে আছে ইসলামিক স্টেট, পাকিস্তানি তালেবান এবং অন্যান্য কিছু গোষ্ঠী। গত এপ্রিলে প্যারিসে ৭০টিরও বেশি দেশের এক বৈঠকে সন্ত্রাসে অর্থদান ঠেকানোর ওপর এক বৈঠক হয়; যাতে অনানুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর প্রতি দরদ দেখানো বন্ধ করতে পাকিস্তানকে জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। এতে চীন, সৌদি আরব এবং তুরস্কও সমর্থন দেয়; যা পাকিস্তানকে বিস্মিত করে।

আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী বহুবার অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান থেকে চালানো আক্রমণের ব্যাপারে মে মাসে পাকিস্তান চরমপন্থিদের মোকাবিলার জন্য এফএটিএফএর কাছে কিছু নতুন প্রস্তাব দেয়; এতে কি আছে তা গোপন রাখা হয়, কিন্তু পশ্চিমা কূটনীতিকরা বলেছেন তা হয়তো এফএটিএফকে সন্তুষ্ট করবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো বাহিনী পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে তালেবানের রসদপত্র সরবরাহের পথ এবং এর নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় পাওয়ার বিষয়টির কড়া সমালোচক। কিন্তু পাকিস্তান এ অভিযোগগুলো অস্বীকার করে থাকে।

এদিকে, লস্করের নেতা হাফিজ সাঈদকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১ কোটি ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করেছে। কিন্তু তিনি পাকিস্তানে অবাধে বক্তৃতা দিয়ে থাকেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist