প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
ধরলা সেতু উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। কেউ এই অগ্রগতিকে রুখতে পারবে না। গতকাল রোববার ধরলা নদীর ওপর দ্বিতীয় সেতু উদ্বোধনকালে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এরপর তিনি গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ নৌরুটে ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন।
ধরলা সেতু উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার আমাদের স্বপ্ন সফল হবে এবং কেউই এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে রুখতে পারবে না। আমি হয়তো আমার জীবদ্দশায় তা দেখে যেতে পাবব না কিন্তু নতুন প্রজন্ম আমাদের এই কাজের সুফল ভোগ করবে। গতকাল সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় তার নামে নবনির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
আওয়ামী লীগ জনগণকে দেয়া ওয়াদা রাখে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, এই ধরলা নদীর ওপর প্রথম সেতুটিও আওয়ামী লীগ ১৯৯৬-২০০১ সাল মেয়াদে সরকারে থাকার সময়ই নির্মাণ করেছিল। কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সেতুটির উদ্বোধন করে যেতে না পারায় বিএনপি এর সাফল্যে দাবিদার হয়ে যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, ধরলার প্রথম সেতু আমি উদ্বোধন করে যেতে পারিনি। তা পরবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের মাস দুয়েকের মধ্যে উদ্বোধন করে। কিন্তু তারা তখন বলে আগের সরকার কোনো উন্নয়ন করেনি। অথচ আমাদের করা সেতুই তারা উদ্বোধন করেছে। যদিও পরবর্তীতে ওই সেতু দিয়ে যাতে আমি চলাচল করতে না পারি সেজন্য পাথর ফেলে তা বন্ধ করেও রাখা হয়েছিল।
বহুল প্রতীক্ষিত এই সেতুটি স্থানীয় জনগণের জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতরের উপহার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এর রক্ষণাবেক্ষণে যতœবান হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ধরলার দ্বিতীয় সেতুটি কুড়িগ্রাম, রংপুর ও লালমনিরহাটের মানুষকে আমি ঈদ উপহার হিসেবে দিয়েছি। এটি আপনারা রক্ষণাবেক্ষণ করবেন।
অপরদিকে মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানায়, গতকাল দুপুর ১২টায় গজারিয়া-মুন্সীগঞ্জ নৌরুটে ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী চারটি টিইইউ সেলফ-প্রোপেল্ড মাল্টিপারপাস ইনল্যান্ড কনটেইনার শিপ এবং চারটি ৮ ইঞ্চি কাটার সাকশন এম্ফিবিয়ান ড্রেজারের উদ্বোধন করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী এগুলো তৈরি করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌপথ হচ্ছে যাত্রী এবং বিশেষ করে কৃষিপণ্য পরিবহনে খুবই সাশ্রয়ী ও গুরুত্বপূর্ণ রুট। এজন্য তার সরকার গোটা দেশকে নদী পথের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে চায়। তিনি দীর্ঘদিন থেকে উত্তোলনকৃত বালুমহলগুলো সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ এসব বালুমহাল ভাঙনের সৃষ্টি করছে। তিনি বালুমহাল ও পরিকল্পিত বালু উত্তোলনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুন্সীগঞ্জ ও গজারিয়া ফেরি সার্ভিস চালুর মধ্য দিয়ে তার সরকারের একটি অঙ্গীকার পূর্ণ হলো।
এ রুটের দূরত্ব প্রায় ২ কিলোমিটার পথ ফেরি পারাপারে সময় লাগবে ৩৫ মিনিট। এরই মধ্যে মুন্সীগঞ্জ ও গজারিয়া ফেরিঘাটে দুইটি পন্টুন স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ রুটে যানবাহন সংখ্যা বাড়লে ফেরির সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান তিনি।
মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া ফেরিঘাট ও ফেরি সার্ভিস চালু হলে এটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে দক্ষিণ বঙ্গের ২১টি জেলার বিকল্প সংযোগ হিসেবে বিবেচিত হবে।
তবে ফেরিঘাটের দুইপাড়ে সড়কের বেহালদশায় যানচলাচল বিঘিœত হচ্ছে। দুই পাড়ের সড়কের বেহালদশায় ফেরি সার্ভিসের সুফল ভোগ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংসয় দেখা দিয়েছে অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। ফেরি সার্ভিসটি সচল রাখতে দুই পাড়ের সড়ক দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এই রুটে চলাচলরত যাত্রী সাধারণ।
"