আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরান কি আবার পরমাণু তৎপরতায় ফিরে যাবে?
ইরান কি খুব শিগগিরই পুরোদমে পরমাণু তৎপরতা চালু করবে? ছয় বড় শক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে মার্কিন সরকারের বেরিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে এ প্রশ্ন এখন খুব বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইরানি নেতাদের সাম্প্রতিক হুমকিগুলো খুবই লক্ষণীয়। তারা বলেছেন, ইউরোপ যদি পরমাণু সমঝোতার শর্তগুলো তথা ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়নের গ্যারান্টি না দেয় কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাহলে তেহরানও এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে আবারো পুরোদমে পরমাণু তৎপরতা চালু করবে। পরমাণু সমঝোতার আলোকে তেহরান অনেক ক্ষেত্রে পরমাণু তৎপরতাকে সীমিত রেখেছে। এ প্রসঙ্গে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি গত শনিবার বলেছেন, তার দেশ দুই-তিন দিন বা প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যেই আবারো পরমাণু তৎপরতা পুরোদমে চালু করতে সক্ষম এবং এজন্য যা যা দরকার তার সবই প্রস্তুত রয়েছে।
ইরান পরমাণু সমঝোতা মেনে চলছে না বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে দাবি করেছেন সে প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, পরমাণু বিষয়ে জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থা আইএইএ তথা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বলে আসছে যে, তেহরান পরমাণু বিষয়ে তার দায়িত্বগুলো পালন করছে এবং আইএইএ ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোয় বিগত ১০ বারের পরিদর্শনেও এই একই কথা বলেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সম্প্রতি বলেছেন, প্লুটোনিয়াম স্থাপনার মাধ্যমে ইরান ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ করবে তা মেনে নেওয়া যায় না এবং দেশটি যে পরমাণু বোমা তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ করছে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সেখানকার সব সামরিক ও পরমাণু গবেষণাগারে তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।
পম্পেওর এসব দাবির জবাবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ইরান ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ করার অধিকার রাখে এবং ইরানের সেই ক্ষমতাও রয়েছে। তাই বিশ্ব-পরিস্থিতির বাস্তবতা সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ধারণা এখনো অনেক সেকেলে বলেই মনে হচ্ছে এবং তিনি তার আগের ব্যর্থ কথাগুলোরই পুনরাবৃত্তি করছেন, যা আমাদের ও বিশ্ববাসীর জন্য শোনার মতো কোনো বিষয় নয়।
আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে ইরান আবারো পুরোদমে শান্তিপূর্ণ পরমাণু তৎপরতা চালানোর অধিকার রাখে। জাতিসংঘ ইরানের এ অধিকারকে যে স্বীকৃতি দিয়েছে, তা আলোচনার ফল নয় বরং পরমাণু ক্ষেত্রে ইরানিদের অগ্রগতি ও সক্ষমতার ফল বলেই সম্প্রতি সর্বোচ্চ ইরানি নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী মন্তব্য করেছেন।
পরমাণু সমঝোতা যাতে টিকে থাকে সেজন্য ইউরোপের সঙ্গে আলোচনা করছে তেহরান। এ সমঝোতা রক্ষার বিষয়ে কয়েক সপ্তাহর মধ্যেই ইউরোপের কাছে প্রয়োজনীয় সব গ্যারান্টি চেয়েছে ইরান। ইরানের ঘোষিত এই সময়সীমা পরমাণু ইস্যুসহ আন্তর্জাতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে ইসলামী এই দেশটির শক্তিশালীর দৃঢ় মনোবল ও অবস্থানকেই তুলে ধরছে।
"