ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ভালুকায় শিক্ষকের পিটুনিতে মাদরাসা ছাত্র নিহত
ময়মনসিংহের ভালুকায় মাদ্রাসা শিক্ষকের লাঠিপেটায় ছাত্র তাওহিদুল ইসলাম (১০) নিহত হয়েছে। গত রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। ওই মাদরাসার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় আতঙ্কে ছিলেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক পালিয়েছেন।
ভালুকার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামের কয়েস মিয়ার ছেলে জামিরদিয়া মাদরাসায়ে উমর (রা.) হাফিজিয়া অ্যান্ড ইসলামী কিন্ডার গার্টেনের হেফজ্ শ্রেণির ছাত্র তাওহিদুল ইসলাম গত রোববার রাতে ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে মারা যায়। এই ছাত্রকে পিটিয়ে মারায় অভিযুক্ত শিক্ষক ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরনিখলা গ্রামের হাফেজ আমিনুল ইসলাম। তাওহিদের বাবা জানান, তার ছেলেকে ওই মাদরাসার শিক্ষক আমিনুল ইসলাম পড়া মুখস্থ না করার কারণে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বুকের হাড় ও একটি পা ভেঙে ফেলে। বিষয়টি গোপন রেখে খেলা করতে গিয়ে আঘাত পেয়েছে বলে তাদের কাছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কয়েক দিন আগে তাওহিদকে রেখে চলে যায়। পরে তাওহিদ তার বাবা-মা ও দাদির কাছে ঘটনা খুলে বলে। এরপর তার অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তারা তাওহিদকে প্রথমে ভালুকা পরে চুরখাই কমিউনিটি ব্যাজড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ৪ মার্চ রোববার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। রোববার মধ্যরাতে তাওহিদ ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এ ঘটনায় ওই মাদরাসার প্রধান শিক্ষক এনামুল হককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। অপরদিকে হাফেজ আমিনুল ইসলাম ঘটনার পর হতে পলাতক রয়েছে। তাওহিদের মা হাসনা হেনা জানান, প্রায় চার বছর পূর্বে ছেলেকে ওই মাদরাসায় ভর্তি করেন, সে ১৮ পারা কোরআন মুখস্থ করেছিল, কিন্তু মাদ্রাসা থেকে ছেলের লাশ বাড়িতে আসবে কখনো ভাবেননি। সোমবার সরেজমিন ওই মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, ছোট ছোট ছেলেরা ভেতরে-বাইরে দৌড়াচ্ছে, ওই সময় কোনো শিক্ষককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কোনো কোনো অভিভাবক তাদের শিশুদের নিয়ে যাচ্ছেন এই মাদরাসা থেকে।
তাওহিদের সহপাঠী নূর আলম ও মিনহাজসহ সবাই জানায়, ২৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে পড়া না পারার কারণে হাফেজ হুজুর মোটা একটা লাঠি দিয়ে তাওহিদকে মেরেছিল। এ ব্যাপারে ওই মাদরাসার সভাপতি আ. হামিদ জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না সোমবার সকালে জানতে পেরেছেন। এদিকে ঘটনার পর হতে আবাসিক ছাত্রদের মাদরাসায় ফেলে শিক্ষকরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। ছাত্ররা বাড়ি চলে যাচ্ছে।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মামুন অর রশিদ জানান, লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
"