নিজস্ব প্রতিবেদক
আমার মা আক্রান্ত, তাই চিকুনগুনিয়া রোগীদের কষ্ট বুঝি : সাঈদ খোকন
১০ দিনের মধ্যে ডিএসসিসি এলাকা চিকুনগুনিয়ামুক্ত করার ঘোষণা
১০ দিনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকা চিকুনগুনিয়া মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। নিজের মা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন সেকথা জানিয়ে তিনি বলেন, এ কারণে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের কষ্ট বোঝেন তিনি। দক্ষিণের এই মেয়র বলেন, ‘আমি যখন বাসা থেকে বের হই, তখন আমার মা আমাকে দোয়া দেন, সাহস জোগান। তার বিমর্ষ চেহারা দেখে আমি বের হই। এই শহরের লাখো মায়ের কষ্ট আমি বুঝি। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের কষ্টও আমি বুঝি। সেই কষ্ট বুকে ধারণ করেই চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি।’
গতকাল শনিবার নগরভবনের সামনে ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সুশীল সমাজ, এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে চিকুনগুনিয়া নিয়ে সচেতনতামূলক শোভাযাত্রার উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র বলেন, ‘আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সভায় বলেছিলাম চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে আসবে। এ ছাড়া গত ১৪ জুলাই চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে মশক নিধন কাজে নিয়োজিত ৩০৩ জন স্প্রে ম্যান ১৪৮টি ফগার এবং ২৭১টি হস্তচালিত মেশিন দিয়ে পরিচালিত মশক নিধন কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন এবং অঞ্চল ৪ এ চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে স্পেশাল ক্রাশ প্রোগ্রাম উদ্বোধন করে ঘোষণা দিয়েছিলাম, আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে। আজ আট দিন পর আপনাদের মুখোমুখি হয়ে বলতে চাই, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকা চিকুনগুনিয়ামুক্ত করবই।’ চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে তাদের ‘সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নাগরিকরাও সচেতন হওয়ায়’ ডিএসসিসির কাজ ত্বরান্বিত হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র। ১০ দিনের মধ্যে ডিএসসিসি এলাকা চিকুনগুনিয়ামুক্ত করার পর তা ফের বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘এর পরে হয়তো চিকুনগুনিয়া মুক্ত হয়ে যাবে। এমনও হতে পারে ৯৮ ভাগ কমে যেতে পারে, ৯৯ ভাগ কমে যেতে পারে। মুক্ত হওয়ার সাতদিন পর আবার নতুন করে এটি ছড়াতে পারে। এ কারণে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাব।’
১৬৬ জনকে বাসায় গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে: ডিএসসিসি নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এ অঙ্গীকার অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হচ্ছে বলে জানান মেয়র। এ কারণে চিকুনগুনিয়া নিয়ে চালু করা কল সেন্টারে রোগীরা অনবরত কল করছেন বলে জানান তিনি। সাঈদ খোকন জানান, গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে কল সেন্টার চালু হয়। শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কল সেন্টারে আসা ৩১ হাজার ৮৫৬টি ফোন ধরা হয়েছে। ২২ হাজার ১১২ জন নাগরিক এসব কল করেছেন। এর মধ্যে ডিএসসিসি এলাকার নাগরিক এক হাজার ৪৩০ জন। ৩৩১ জন সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে চিকিৎসাসেবা চেয়েছেন, যার মধ্যে ১৬৬ জনকে বাসায় গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মেয়র বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে থেকেও অনেকে কল করেছেন। তারা আমাদের সেবা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন, চিকিৎসা সেবা, ওষুধ নেওয়ার জন্য এসব কল এসেছে। তিনি আবারো বলেন, ‘ডিএসসিসি এলাকায় চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীদের সেবার জন্য আমরা কল সেন্টার চালু করেছি। আপনারা কল করবেন, ডাক্তার বাড়িতে যাবে। আমার এই প্রতিশ্রুতি নিয়ে যদি কেউ অবহেলা করে, তাহলে আমাকে অভিযোগ করবেন। আমি ব্যবস্থা নেব।’
নগর ভবন থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রায় সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি নগর ভবন থেকে বের হয়ে গোলাপশাহ মাজার, জিরোপয়েন্ট, পল্টন, প্রেস ক্লাব, কার্জন হল, বঙ্গবাজার হয়ে নগর ভবনে গিয়ে শেষ হয়।
"