নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯

পেঁয়াজে বেড়েছে মূল্যস্ফীতি

প্রবৃদ্ধির হার বাড়লেও মাথাপিছু আয় অপরিবর্তিত

পেঁয়াজের কারণে অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৪১ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব তথ্য প্রকাশ করেন।

এদিকে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার বাড়লেও মাথাপিছু আয় অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ ও মাথা পিছু আয় দাঁড়িয়েছে এক ৯০৯ ডলারে। গত অর্থবছরের জন্য গত মার্চে তৈরি খসড়া হিসেবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ ও মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯০৯ ডলার ধরা হয়েছিল। গতকাল একনেক সভার পর সাংবাদিকদের সামনে বিবিএসের এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

মন্ত্রী জানান, নভেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। তবে মূল্যস্ফীতি বাড়ার প্রধান নায়ক হিসেবে পেঁয়াজকেই উল্লেখ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। বলেন, পেঁয়াজের দাম এবং সবজির দাম কমলে মূল্যস্ফীতি কমে যাবে। আমরা তাই করার চেষ্টা করছি।

ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

একই সময়ে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১২ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১১ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১৩ শতাংশে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রীর পাশাপাশি আরো উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম।

মাথাপিছু আয় না বাড়ার কারণ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা কিছুটা মান হারানোর কারণে ডলারের হিসাবে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পায়নি। তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে টাকার অঙ্কে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। টাকার অঙ্কে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চূড়ান্ত মাথাপিছু আয় হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৪৪০ টাকা, যা খসড়া হিসেবে ১ লাখ ৬০ হাজার ৬০ টাকা ধরা হয়েছিল। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর ওই অর্থবছরের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৭৫১ ডলার।

চলতি অর্থবছরে জিডিপি ৮ দশমিক ২ শতাংশ হারে বাড়বে বলে প্রাক্কলন করেছে বিবিএস। তবে বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি ৭ দশমিক ২ শতাংশ হারে বাড়বে। বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চূড়ান্ত হিসেবে গত অর্থবছরের জিডিপির আকার চলতি মূল্যে দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৪২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ২২ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরে শিল্প খাতে চূড়ান্ত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ০৮ শতাংশ, যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসেবে কৃষি খাতে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ ও সেবা খাতে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা তার আগের অর্থবছরে ছিল যথাক্রমে ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close