নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ নভেম্বর, ২০১৯

আনসার আল ইসলামের ৬ সদস্য আটক

‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে চলাচল করে জঙ্গিরা

নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা বিভিন্ন গোপন অ্যাপসের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে থাকেন। বড় কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া সাধারণত তারা কখনো একসঙ্গে জড়ো হয় না। নিজেদের মধ্যে পরিচিত না হয়েই তারা ‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে চলাচল করে সংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সম্প্রতি বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজধানীর উত্তরা এলাকায় আনসার আল ইসলামের কয়েকজন একসঙ্গে মিলিত হয়।

তবে বাস্তবায়নের আগেই পরিকল্পনা ভেস্তে দেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) সদস্যরা।

গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে আনসার আল ইসলামের ছয় সদস্যকে আটক করে র‌্যাব-৪। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, মোবাইল, ল্যাপটপ ও জঙ্গিবাদী ট্রেনিংসহ বিভিন্ন কনটেন্ট জব্দ করা হয়। আটকরা হলেন শফিকুল ইসলাম ওরফে সাগর ওরফে সালমান মুক্তাদির (২১), ইলিয়াস হাওলদার ওরফে খাত্তাব (৩২), ইকরামুল ইসলাম ওরফে আমীর হামজা (২১), আমীর হোসাইন ওরফে তাওহীদি জনতার আর্তনাদ (২৬), শিপন মীর ওরফে আবদুর রব (৩৩) ও ওয়ালিউল্লাহ ওরফে আবদুর রহমান (২৫)।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, আটকদের সবাই ২-৫ বছর ধরে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িত। তারা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিপক্ষে। অর্থাৎ তারা যেকোনো মূল্যে কথিত ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলে মনে করছে তাদেরই উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে জঙ্গি সংগঠনটি।

আনসার আল ইসলাম বর্তমানে মূলত দুই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রথমত মোটিভেশনাল কার্যক্রমের মাধ্যমে সদস্য বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দ্বিতীয়ত, তারা মনে করে সবাইকে হত্যা করে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তবে যারা সরাসরি ইসলামী রাজনীতির বিরোধিতা করে, যারা নাস্তিক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় সংগঠনের সদস্যরা।

র‌্যাব-৪ অধিনায়ক আরো বলেন, অতীতের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আনসার আল ইসলামের সদস্যরা টার্গেট ব্যক্তিকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় না। তারা এক্ষেত্রে সাধারণত চাপাতি ব্যবহার করে থাকে। সদস্যরা কোনো বড় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া কখনো এক হয় না। একে অন্যের সঙ্গে গোপন অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

বড় ধরনের কোনো নাশকতার পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা উত্তরায় এক হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতের কোনো কর্মকা-ে তারা জড়িত ছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেনি। তবে এসব ঘটনাকে তারা ‘জায়েজ’ বলে মনে করে। সুনির্দিষ্ট কোথায় হামলা করা হতো, এ বিষয়ে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান তিনি।

আটকদের মধ্যে সালমান মুক্তাদির দেশব্যাপী অনলাইনে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। আবদুর রহমান ঢাকা বিভাগের এবং আমির হামজা খুলনা বিভাগের সংগঠনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close