চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২৭ মে, ২০১৯

সম্পত্তির লোভে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে খুন

চট্টগ্রামে ট্যাংকে মা-মেয়ের লাশ

নগরীর খুলশী থানার আমবাগান ফ্লোরাপাস রোডের নিজ বাড়িতে মনোয়ারা বেগম (৯৭) ও তার মেয়ে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা শাহ মেহেরুন নেসাকে (৬৭) খুনের ঘটনায় গ্রেফতার দুজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তারা জানান, সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় মা-মেয়েকে খুন করা হয়েছেন।

এই হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়াদের কোরআন ছুঁয়ে শপথও করায়, যাতে এ ঘটনা কেউ প্রকাশ না করেন। এই হত্যাকান্ডের হোতা মনোয়ারা বেগমের ছেলে। তিনি আমেরিকা থেকে এসে এ খুনের ঘটনায় অংশ নেন। গত শনিবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে গ্রেফতার হারুন অর রশিদ মুন্না (৩৯) ও গাড়িচালক মো. মাহফুজ (২৮) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গত শুক্রবার রাতে তাদের দুজনকে নগরীর টাইগারপাস এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. ইলিয়াছ খান।

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারের পর আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মা-মেয়ে হত্যাকান্ডের সঙ্গে মাসুদুর রহমান জড়িত। আমেরিকা থেকে দেশে এসে মা ও বোনকে খুন করে পরদিন আবার চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন আসামিরা। হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া অন্যদের কোরআন ছুঁয়ে শপথও করান, যাতে এ ঘটনা কেউ প্রকাশ না করেন। এসব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ছেলে মাসুদুরের পরিকল্পনা ছিল মায়ের কাছ থেকে খুলশীর ওই বাড়ির দানপত্র আদায় করা। পরে এসব সম্পত্তি শাহাবউদ্দিন সাবুর মাধ্যমে তিন কোটি টাকায় বিক্রির কথা ছিল।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ১২টার দিকে মাসুদুর দরজায় টোকা দেন। মেহেরুন দরজা খুলে দেন। তখন মেহেরুন জানতে চান, তুই বিদেশ থেকে কখন আসলি। হঠাৎ দেশে। কিছুক্ষণ পর মাসুদুর মেহেরুনের কাছ থেকে দুটি সম্পত্তির দলিলে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেন। মেহেরুন সই দিতে অসম্মতি জানালে প্রথমে তাকে গলাটিপে ধরেন মাসুদুর। তার কিছুক্ষণ পর পিঁড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তারপর মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে (মেহেরুন) ট্যাংকিতে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনাটি মা দেখে ফেললে মা মনোয়ারা বেগমকে সবাই মিলে হত্যা করে মরদেহ পানির রিজার্ভ ট্যাংকিতে ফেলে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ১৫ জুলাই নগরীর খুলশী থানার আমবাগান ফ্লোরাপাস রোডে নৃশংসভাবে খুন হন মনোয়ারা বেগম (৯৭) ও তার মেয়ে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকতা শাহ মেহেরুন নেসা বেগম (৬৭)। মেহেরুন নেসা রূপালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি অবসরে যান। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।

এ ঘটনায় মনোয়ারা বেগমের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে খুলশী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার পর মেহেরুন নেসার ভাইয়ের ছেলে মুশফিকুর রহিম ব্যাপ্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে মুশফিকুর রহিম ব্যাপ্তি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, এ খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. মাসুদ রানা ও মো. শাহাবউদ্দিন ওরফে সাবু ওরফে মুছা জড়িত। এ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close