নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯

গণফোরামের সভায় ড. কামাল

বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে হবে

বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে বললেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘তাড়াতাড়ি ঐক্যফ্রন্ট গঠন করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুলত্রুটি সংঘটিত হয়েছে তা সংশোধন করে ভবিষ্যতের জন্য সৃদৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমরা অতীতে জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতির চিন্তাও করিনি। ভবিষ্যতেও পরিষ্কার যে, জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতি করব না।’ গতকাল শনিবার ঢাকার আরামবাগে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভা শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করে অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে কখনো রাজনীতি করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। আমি যখন ঐক্যে সম্মতি দিয়েছি তখন জামায়াতের কথা আমার জানা ছিল না। এটা ঐক্যফ্রন্ট গঠনে ভুল ছিল। এছাড়াও তড়িঘড়ি করে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে যেসব ভুলত্রুটি হয়েছে তা সংশোধন করা হবে।

জাতীয় নির্বাচনকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, দেশের মানুষের মধ্যে মৌলিক বিষয়ে কিন্তু ঐক্যমতে আসেনি। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের সংসদ গঠিত হোক এটা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু ৩০ ডিসেম্বর যা ঘটেছে সেটা তো আপনারা সংবাদমাধ্যমে পাচ্ছেন। দেশের স্বার্থে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে সেটা পারে দাবি করে ড. কামাল বলেন, তারা চাইলে দুই তিন মাস বা তার চেয়ে কম সময়ের মধ্যে একটা নির্বাচন করা যেতে পারে। এছাড়া আগামী ২৩ এবং ২৪ মার্চ ঢাকায় গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল হবে বলেও জানান ড. কামাল হোসেন।

ড. কামাল বলেন, জামায়াতের ২২ জন প্রার্থীকে প্রতীক দেওয়া হবে বিষয়টি আমি জানতাম না। দেওয়ার পর বিএনপির কাছে আমি ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। তারা বলেছে সবাই ধানের শীষের প্রার্থী। জামায়াতের কেউ নেই।

লিখিত বক্তব্যে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, তাড়িঘড়ি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃত ভুলত্রুটি সংশোধন করে ভবিষ্যৎ সংগঠিতভাবে গঠন করা হবে।

বিএনপিকে জামায়াত ছেড়ে আসতে চাপ সৃষ্টি করা হবে কি না সে বিষয়ে ড. কামাল বলেন, আমি তো মনে করি জামায়াত ছেড়ে আসতে বিএনপিকে চাপ দেওয়া যেতে পারে। বিএনপির সঙ্গে জামায়াত থাকলে ভবিষ্যতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, জামায়াত নিয়ে কোনো রাজনীতি নয়, অবিলম্বে এ বিষয়ে সুরাহা চাই।

সরকারের উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, আপনারা যদি মনে করেন আপনাদের ওপর মানুষের আস্থা আছে সেটা প্রমাণ হোক একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। যাতে প্রমাণ হয় সব মানুষ যেতে পেরেছে, লাইনে যারা দাঁড়িয়েছে তারা ভোট দিতে পেরেছে। আমাদের তো অনেক লাইন দেখানো হয়েছে, অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েছে কিন্তু ভোটের সময় বলা হয়েছে আপনারটা হয়ে গেছে, আপনাদের আর কাজ নেই।

সরকারকে বলব বিতর্ক না বাড়িয়ে একটা সমাধান করা হোক। গণতন্ত্রের ব্যাপারে, সংবিধানের ব্যাপারে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের মধ্যে ঐক্য আছে। যেখানে এত মৌলিক ব্যাপারে ঐক্যমত আছে, সেখানে সরকারকে এটার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কিন্তু সুযোগ দেওয়া উচিত যাতে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারে। সবার আস্থা নিয়ে যে কেউ সরকার গঠন করে তারা সেভাবে সরকার গঠন করলে তাদেরও দায়িত্ব পালন করা সহজ হয়, দেশও যেটা প্রাপ্য সেটা পায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close