নিজস্ব প্রতিবেদক ও টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ০৭ জানুয়ারি, ২০১৯

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে উত্তরা ও টঙ্গীতে শ্রমিক বিক্ষোভ

আহত ৫ : যাত্রীদের ভোগান্তি

ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখ উত্তরায় বিমানবন্দর সড়কে পাঁচ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। এদিকে একই দাবিতে শিল্প শহর টঙ্গীতেও পোশাক শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় ৫ শ্রমিক আহত হয়েছেন এবং যানবাহনের অভাবে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা।

গতকাল রোববার বেলা পৌনে ২টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানন্দরের সামনে গোলচত্বর থেকে উঠে যাওয়ার আগে তারা আজ সোমবার সকালে আবারও বিক্ষোভে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। বিমানবন্দর পুলিশের সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, উত্তরা এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টের শত শত শ্রমিক সকাল ৯টার দিকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।

উত্তরা আজমপুর থেকে জসিমউদ্দিন পর্যন্ত সড়কে তাদের অবস্থানের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঢাকার উত্তরখান ও দক্ষিণখান এলাকা থেকেও শ্রমিকরা এসে সড়কে অবস্থান নিতে শুরু করেন। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। বিভিন্ন দাবিতে রোববার ঢাকা বিমানবন্দরের সামনের রাস্তা অবরোধ করে পোশাক শ্রমিকরা স্লোগান দেন। আন্দোলনরত শ্রমিকদের একটি অংশ বেলা ১১টার দিকে বিমানবন্দরের সামনের গোলচত্বরে সামনে অবস্থান নেন। পাশাপাশি

জসিম উদ্দিন, রাজলক্ষ্মী, আজমপুর, হাউস বিল্ডিং, আবদুল্লাহপুর এলাকায় তাদের বিক্ষোভ চলতে থাকে।

আন্দোলনরত শ্রমিকদের মধ্যে শাখাওয়াত হোসেন নামে একজন বলেন, ‘সকালে সহকর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি বিক্ষোভে এসেছেন। আমি জানতাম না আন্দোলনের বিষয়ে। আমার অফিসে খবর দিছে অন্যরা। সেই খবর শুইনা এইখানে আসছি। আমাদের দাবি, আমাদের বেসিক সাড়ে আট হাজার টাকা থাইকা বাড়াইয়া সাড়ে ১০ হাজার টাকা করুক।’

দক্ষিণ খানের চালাবন এলাকার ইপিলিয়ন গার্মেন্টের কর্মী সুমাইয়া অভিযোগ করেন, তাদের ওপর নানা ধরনের ‘অন্যায়’ করা হয়, এজন্য তারা পথে নেমেছেন। আমাদের বেতন যা বাড়ানোর কথা ছিল তা তো বাড়ায়নি। উল্টো কাজের পরিমাণ বেড়ে গেছে। প্রতি ঘণ্টায় টার্গেট দিয়া দেয়। টার্গেট পূরণ না হলে গালিগালাজ করা হয়।’

ক্যাসিওপিয়া গার্মেন্টেসের কর্মী মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান বলেন, ‘কাজের চাপে পেশাবও করতে যাইতে পারি না। টার্গেট পূরণ না করতে পারলে বকাঝকা, মারধর ও করে।’ এদিকে বিমানবন্দর সড়কের উভয় দিকে যান চলাচল বন্ধ থাকায় বিদেশগামী যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অনেককে কুড়িল থেকে ব্যাগ হাতে হেঁটে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়।

দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ করে বেলা পৌনে ২টার দিকে বিমানন্দরের সামনে গোলচত্বরের অবস্থান ছেড়ে উঠে যান বিক্ষোভকারীরা। শ্রমিকরা উঠে যাওয়ার পর বেলা ২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

এদিকে মজুরি বাড়ানো এবং মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে টঙ্গীতে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। গতকাল রোববার বিকেল পৌনে ৪টা থেকে টঙ্গীর গাজীপুরা সাতাইশ এলাকার ভিয়েলা টেক্স নামক পোশাক কারখানায় প্রথম শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। পরে আশপাশের পোশাক কারখানাগুলোতে বিক্ষোভ শুরু করে কারখানার সামনের সড়কে অবস্থান নেন তারা।

এ সময় শাখা রাস্তাগুলো বন্ধ করে দিলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করলে অন্তত ৫ শ্রমিক আহত হন। গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আমিরুল আলম জানান, ন্যূনতম বেতন কাঠামো ও তা নিশ্চিতের দাবিতে শ্রমিকরা দুপুর থেকে বিক্ষোভ করছেন। তাদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে আশপাশের এলাকার পোশাক শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিতে শুরু করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close