প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। গতকাল বুধবার সকাল ১০টা ৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে তার সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সমাধির পাশে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অর্নার প্রদান করা হয়। বিউগলে বেজে ওঠে শোকের মূর্ছনা। বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে সৃষ্টি হয় শোকাবহ পরিবেশ। তিন বাহিনীর প্রধানরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে সমাধি প্রাঙ্গণে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। মোনাজাতে দেশ ও জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এ সময় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুর কাদের, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, এলজিইডিমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান, গোপালগঞ্জ জেলা পরিশদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী লিয়াকত আলী লেকু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর কাদেরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স মসজিদ প্রাঙ্গনে দোয়া মাহফিল হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া হেলিপ্যাডে পৌঁছান এবং সড়ক পথে ১০টা ৩ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়াসহ গোপালগঞ্জে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুলিশ, ডিবি পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। এদিকে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জের সীমানা মুকসুদপুর থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চরগোবরা এবং ঘোনাপাড়া থেকে টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু সমাধিস্থল পর্যন্ত অন্তত পাঁচ শতাধিক কালো-কাপড়ে মোড়া তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে এসব তোরণ নির্মাণ করেছেন জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা যুবলীগ, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি।

"