নিজস্ব প্রতিবেদক
দূতাবাসের গাড়ি কেনার টাকা চুরি
দুই কূটনীতিকের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের সিদ্ধান্ত
দূতাবাসের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনার টাকা চুরি হয়ে গেছে। ব্যাংক হিসাব থেকে কে বা কারা টাকা তুলে নিয়ে গেছে। কোনো হদিস মিলছে না। অবশেষে এক রাষ্ট্রদূতসহ দুই সিনিয়র কূটনীতিককে দায়ী করে জরিমানার মাধ্যমে চুরি হওয়া এই টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের করাচি মিশনের জন্য জার্মানির তৈরি মার্সিডিজ বেঞ্জ ব্র্যান্ডের গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে এই দুর্নীতি ও অর্থ চুরির ঘটনা ঘটে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হন জার্মানিতে তখনকার রাষ্ট্রদূত (বর্তমানে মিসরে) মোহাম্মদ আলী সরকার ও করাচিতে ডেপুটি হাইকমিশনার নুরে হেলাল সাইফুর রহমান। করাচি মিশনের জন্য মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি কিনতে প্রায় ৪০ হাজার ইউরো বরাদ্দ দেয় সরকার। এই অর্থ করাচির বাংলাদেশ মিশনের ব্যাংক একাউন্ট থেকে জার্মানির বার্লিনে ডয়েচ ব্যাংকের দূতাবাস একাউন্টে পাঠানো হয়। করাচির ডেপুটি হাইকমিশনারের অনুরোধে বার্লিনে রাষ্ট্রদূত এই অর্থ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করেন। এই একাউন্ট থেকে ৪০ হাজার ইউরো চুরি হয়ে যায়। কে বা কারা তা তুলে নিয়ে যায়। এই একাউন্ট নম্বরটি ছিল ভুয়া। ফলে পাঠানো অর্থ বহু চেষ্টার পরও উদ্ধার করা যায়নি। ডেপুটি হাইকমিশনার নুরে হেলাল ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আলীকে অর্থ লোপাটের জন্য দায়ী করা হয়।
এই দুই কর্মকর্তা পরস্পরের যোগসাজশে অথবা দায়িত্বে ও কর্তব্যে অবহেলার মাধ্যমে অর্থ চুরি হয় বলে তদন্তে প্রমাণ মিলে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুজ্জামান কয়েক মাস ধরে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এই টাকা চুরির ঘটনা তদন্ত করেন। দুই কূটনীতিককে ঢাকায় তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ এবং সব কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তদন্ত রিপোর্টে দুই কূটনীতিকের অপরাধ ও অবহেলা নিশ্চিত হয়। তদন্ত রিপোর্ট পেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নূরে হেলাল ও মোহাম্মদ আলীর কাজ থেকে চুরি হওয়া অর্থ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়। সম্প্রতি এ বিষয়ে নির্দেশও জারি করে মন্ত্রণালয়। প্রত্যেককে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। চুরি হওয়া ৩৫ লাখ টাকা তাদের বেতন বা আনুতোষিক থেকে আদায় করার মাধ্যমে লঘু দন্ডদেয়া হয়।
"