reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ জুলাই, ২০১৯

বন্যা নিয়ন্ত্রণে চাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা

মানবতা শব্দটি ধরণির জন্মলগ্ন থেকেই অবহেলিত। আজ তা বহু গুণে বেড়েছে। আর এই অবহেলাজনিত কারণে মানবতা শব্দটি আজ দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বিশ্বের কোনো দেশেই তার ঠাঁই মিলছে না। সবাই কথামালার ফুলঝুরিতে মানবতাকে সর্বোচ্চ সম্মান দেখালেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই বললেই চলে। স্বার্থের অন্বেষায় সবাই ব্যস্ত। কখনো ব্যক্তিগত, কখনোবা গোষ্ঠীগত আবার কখনোবা রাষ্ট্রীয়। এই স্বার্থের প্রতি আনুগত্যের কারণেই আজ মানবতার এই করুণ হাল। বিশ্বজুড়ে পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণও মানবতার দ্বীপান্তর। মানবজাতির একটি ছোট অংশ জ্ঞাতসারেই মানবতাকে দ্বীপ চালানে পাঠিয়েছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে বাকি সবাইকে। বাংলাদেশও এর বাইরে থাকতে পারেনি। তাই বন্যা আজ এ দেশের নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উজানের অসংখ্য বাঁধকেই বন্যার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে উজান থেকে ধেয়ে আসা পানি ধারণ করার মতো ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই প্লাবিত হচ্ছে জনপদ এবং ফি বছর। এবং নির্দিষ্ট সময়েই। নদীর উজানে থাকা দেশগুলো আন্তর্জাতিক নদী আইনের তোয়াক্কা করছে না। ইচ্ছামতো উজানের নদীগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে বাঁধ দিয়ে। বিশ্ব মানবতার কথা মুখে বলছেন সবাই। মানছেন না কেউ। তাই সময় এসেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণে আমাদের নতুন করে ভাবার। চাই সময়োপযোগী নতুন পরিকল্পনা। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা।

যথারীতি প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বন্যায় ভাসছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে; বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। খাদ্য ও আশ্রয় সংকটে রয়েছে মানুষ ও গবাদিপশু। অনেক এলাকায় বন্ধ হয়েছে সড়ক ও রেল যোগাযোগ। প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। আমন ফসল অনেকটা হুমকির মুখে। ক্ষতির পরিমাণ কত, তা এখনো নির্দিষ্ট করে জানা না গেলেও বলা যায়, এ টাকা বন্যা প্রতিরোধে ব্যয় করলে প্রতিরোধ কার্যক্রম অনেকটা এগিয়ে যেতে পারে। এই ভাবনা মাথায় রেখে আমাদের নদীগুলোকে সচল করা আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। নদীকে দখলমুক্ত করে এবং গভীরতা বাড়িয়ে নাব্য ফিরিয়ে আনাই হবে বন্যা নিয়ন্ত্রণের প্রথম কাজ। এজন্য প্রয়োজন হবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের।

আমরা জানি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই দখলদারদের হাত থেকে নদীকে দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি নদী খননের কার্যক্রমও চলছে। এ কার্যক্রমকে সফল করার জন্য কেবল সরকারের ভূমিকা থাকলেই চলবে না। ভূমিকা থাকতে হবে সাধারণ মানুষেরও। তাদের বুঝতে হবে এ দেশ রক্ষা করার দায়িত্বও তাদের। সরকারের একার পক্ষে তা করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে যারা ভূমি দখল করে নদী হত্যার অপচেষ্টায় লিপ্ত; তাদেরও স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থকে দেশের স্বার্থের কাছে সমর্পণ করতে হবে। যদি কেউ এর ব্যত্যয় ঘটানোর চেষ্টা করেন; তা হলে সরকারকে তা দেখতে হবে যুগান্তকারী নিদর্শন তৈরির মতো। আমরা আশা করি, সরকার সেই দৃষ্টান্ত স্থাপনে সক্ষম হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close