আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৭ জুন, ২০১৯

ট্যাংকার বিস্ফোরণ : সৌদিও দুষল ইরানকে

ওমান উপসাগরে তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণের জন্য আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানকে দোষারোপ করেছে সৌদি আরব। এর আগে সৌদি মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এক ভিডিও প্রকাশ করে বিস্ফোরণের জন্য ইরানকে দায়ী করে। নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনার দাবি করে গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকেও একই রকমের বক্তব্য আসলেও দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন মনে করেন, এই ঘটনায় তেহরানকে দায়ী করার মতো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই। উল্লেখ্য তেহরানের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে উত্তেজনার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির এক মাসের মধ্যে ওই অঞ্চলের দুটি স্থানে তেলবাহী ট্যাংকারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দুটি ঘটনাতেই যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের কয়েকটি মিত্র দেশ ইরানকে দায়ী করলেও তেহরান জোরালোভাবে তা অস্বীকার করে আসছে।

গত বৃহস্পতিবার সকালে ওমান উপসাগরে দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। ট্যাংকার দুটির একটি মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার এবং অপরটি পানামার পতাকাবাহী কোকুকা কারেজিয়াস। ফ্রন্ট অ্যালটেয়ার নরওয়ের মালিকানাধীন আর কোকুকা জাপানের মালিকানাধীন। বিস্ফোরণের পর দুই ট্যাংকার থেকে ৪৪ জন ক্রুকে উদ্ধার করে ইরানি কর্তৃপক্ষ। বিস্ফোরণের কারণ জানা না গেলেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এর জন্য ইরানকে

দায়ী করছে। এবারে এই

তালিকায় যোগ দিল মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত মিত্র সৌদি আরব।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, কোনো হুমকি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দ্বিধা করবে না তার দেশ। আরব দৈনিক আশারক আল আওসাতকে বিন সালমান বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলে যুদ্ধ চাই না...কিন্তু আমাদের জনগণ, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখ-তা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থের ওপর যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় আমরা কোনো ধরনের দ্বিধা করব না’। তিনি বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর তেহরান সফরকেও সম্মান দেখায়নি ইরানের শাসক গোষ্ঠী। তিনি সেখানে থাকা অবস্থাতেই তারা (ইরান) দুটি ট্যাংকারে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যার একটির মালিকানা জাপানের। যুবরাজের আগে সৌদির জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল-ফালিহ, এই বিস্ফোরণের বিরুদ্ধে ‘দ্রুত ও বিস্তৃত’ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

২০১৫ সালের জুনে তেহরানের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে চুক্তি স্বাক্ষর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন (পি-ফাইভ) ও জার্মানি (ওয়ান)। চুক্তি অনুযায়ী ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় ইরান। বিনিময়ে দেশটির ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়। পূর্বসূরি ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে গত বছরের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর নভেম্বরে তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়। অন্যদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো এ সমঝোতা বাস্তবায়নের কথা মুখে বললেও কার্যত তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ

করে আসছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনে ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে হতাশা জানিয়ে ৮ মে চুক্তিটি থেকে আংশিক সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ইরানও। এর জবাবে ইরানকে চাপে রাখতে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জোরালো করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close