আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাপানে ২৫ সেকেন্ড আগে ট্রেন ছাড়ায় শোরগোল
জাপানের একটি রেল সংস্থা তাদের একটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ের ২৫ সেকেন্ড আগে স্টেশন ছাড়ায় দুঃখপ্রকাশ করেছে। গত প্রায় ছয় মাসে এটি এ ধরনের দ্বিতীয় ঘটনা। রেল পরিচালনা সংস্থা বলেছে, ‘আমাদের খদ্দেরদের এর ফলে যে বড় রকমের অসুবিধা হয়েছে, তা একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য।’ জাপানে ট্রেন এতই ঘড়ির কাঁটা ধরে ছাড়ে অর্থাৎ সময়ানুবর্তিতার মাপকাঠি সেখানে এতই উঁচু যে, এই ঘটনাকে সেখানে দেখা হচ্ছে ‘মান পড়ে যাওয়া’ হিসেবে। তারা বলছে, মাত্র ছয় মাস আগেই নভেম্বরের শেষে তাদের একটা ট্রেন ছেড়েছিল নির্ধারিত সময়ের ২০ সেকেন্ড আগে আর এবারে সেটা গিয়ে দাঁড়াল পুরো ২৫ সেকেন্ডে! ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে রীতিমতো শোরগোল। জাপানে ট্রেন খুবই ঘড়ির কাঁটা ধরে চলে বলে সুনাম রয়েছে। এবং এই ট্রেনটির ক্ষেত্রে পরে জানা যায় যে আসলেই ট্রেনটিতে ওঠার জন্য যাত্রী তখনো বাকি ছিল। প্ল্যাটফর্মে পড়ে থাকা যাত্রীরা রেল সংস্থার কাছে অভিযোগ করেন এবং এর অল্পক্ষণের মধ্যেই সংস্থার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া হয়। গত বছর নভেম্বর মাসে সুকুবা এক্সপ্রেস লাইনের একটি ট্রেন যেটি টোকিও ও সুকুবা শহরের মধ্যে যাতায়াত করে, সেই সংস্থার কর্তৃপক্ষদের যাত্রীদের কাছে ট্রেন ২০ সেকেন্ড আগে ছেড়ে ‘অসুবিধা সৃষ্টির জন্য গভীরভাবে দুঃখপ্রকাশ’ করতে হয়েছিল। সেবারেও ট্রেন নির্ধারিত সময়ের আগে ছাড়ার ঘটনা ঘটেছিল সময় নিয়ে কন্টাকটরের ভুল বোঝাবুঝির কারণে।
১‘তবে সেবার কোনো যাত্রী প্ল্যাটফর্মে পড়ে থাকার ঘটনা ঘটেনি।
কখন বলা যাবে ট্রেন ঠিক টাইমে আছে?
বিশ্বের অনেক দেশই তাদের পরিষেবায় কত শতাংশ ‘ট্রেন সঠিক সময়ে’ চলছে তার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে।
সাধারণত মনে করা হয় যে, ট্রেন লেট না হলে বলা যাবে ‘ট্রেন সময়ে আছে’। কিন্তু বিষয়টা অত সহজ নয়।
তাহলে ‘ট্রেন সঠিক সময়ে’ এর অর্থ কোন দেশে কী?
ইউরোপের মধ্যে সুইজারল্যান্ডে ট্রেন চলে সবচেয়ে বেশি ঘড়ির কাঁটা ধরে। তবে সুইসদের হিসেবে একটা ট্রেন যদি ঘোষিত সময়ের ৩ মিনিট পর স্টেশনে ঢোকে তাহলে বলা যাবে সেই ট্রেন লেট করেছে।
অন্যদিকে ব্রিটেনে একটা ট্রেন ৫ মিনিট দেরি করলেও বলা হবে না ট্রেনটা লেট আছে, বরং ধরা হবে ট্রেনটা সময়েই আছে।
আমেরিকায় ২৫০ মাইল যাত্রাপথের ট্রেনের ১০ মিনিট দেরি করা গ্রহণযোগ্য। এবং যাত্রাপথ ৫৫০ মাইল হলে সেখানে ট্রেনটি ৩০ মিনিট পর্যন্ত দেরি করলেও ধরা হবে ট্রেনটি সময়ে আছে।
তবে আয়ারল্যান্ডে একটা ট্রেন ১০ মিনিট দেরি করলেও বলা যাবে ট্রেনটি সময়ে আছে।
অস্ট্রেলিয়ায় আবার বিভিন্ন এলাকায় এই সময়ের রকমফের আছে। কোথাও ১১ মিনিট পর্যন্ত হাতে রাখা যায়, কোথাও আবার ৪ থেকে ৬ মিনিট বেশি দেরি হলে ট্রেন লেট বলে ধরা হয়।
তাইওয়ানে এক হিসাবে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে ৯৯.৬৬% ট্রেন একেবারে ঘড়ির কাঁটা ধরে চলেছে।
তবে জাপানে ট্রেন চলাচলে সময়ানুবর্তিতা বিশ্বের সব দেশের ওপরে। সেখানে এক সেকেন্ড আগে-পরেও সময়ানুবর্তিতা ভঙ্গ বলে ধরা হয়।
"