গাজী শাহাদত ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ

  ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪

সরকারি ধান-চালসংগ্রহ

সিরাজগঞ্জে দেড় মাসে একমুঠো ধানও পায়নি তিন খাদ্যগুদাম

সিরাজগঞ্জের সরকারি ধান-চাল সংগ্রহের খাদ্য গুদাম । ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

সরকারি ধান-চাল সংগ্রহ শুরুর দেড় মাসে সিরাজগঞ্জের তিনটি সরকারি খাদ্য গুদামে একমুঠো ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত জেলার উল্লাপাড়া, তাড়াশ ও কামারখন্দ উপজেলা খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহের এই চিত্র দেখা গেছে। তবে খাদ্য বিভাগের দাবি, জেলার অন্য চারটি গুদামে ৬৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করতে পেরেছে তারা।

বাজারের চেয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্য কম হওয়ায় সরাসরি হাটে আমন ধান বিক্রি করছেন কৃষকরা। অন্য দিকে চালকল মালিকরা বলছেন, বাধ্য হয়ে খাদ্যগুদামে চাল দিতে গিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২৩ নভেম্বর সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে আমন ধান ও চাল সংগ্রহের অভিযান শুরু করে সরকার। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এ অভিযান শেষ হবে। সরকারি গুদামে সংগ্রহের জন্য প্রতি কেজি চাল ৪৪ টাকা ও ধান ৩০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

সিরাজগঞ্জ জেলায় সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কেনার লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৭৫১ মেট্রিক টন ধান এবং চালকল মালিকদের কাছ থেকে ৭ হাজার ৩৬৭ মেট্রিক টন চাল। গুদামে চাল দিতে ২২৮ জন চালকল মালিক চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।


  • ৭ হাজার ৩৬৭ টন লক্ষমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ ৪ হাজার ৯৩৬ টন চাল।
  • বাজারের চেয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্য কম হওয়ায় সরাসরি হাটে আমন ধান বিক্রি করছেন কৃষকরা।
  • বাধ্য হয়ে খাদ্যগুদামে চাল দিতে গিয়ে লোকসান হচ্ছে দাবি চালকল মালিকদের।

এদিকে ধান-চাল সংগ্রহ শুরুর দেড় মাসে হয়ে গেলেও মাত্র ৪ হাজার ৯৩৬ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে খাদ্য বিভাগ। কিন্তু জেলার তিনটি গুদামে এক মুঠো ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি তারা।

স্থানীয় বাজার ঘুরে জানা গেছে, কৃষকরা প্রতি মণ ধান বিক্রি করছেন ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা করে। সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ বলেন, তিনি ২ বিঘা জমি থেকে ৩৫ মণ ধান পেয়েছেন। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে বেশি মূল্য পাওয়ায় ধান খাদ্যগুদামে তিনি দেননি।

একই কথা জানিয়ে কৃষক আমজাদ আলী। তিনি বলেন, সরকারি গুদামে ধান দিতে গেলে বিল উত্তোলনসহ নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। স্থানীয় বাজারে কোনো ঝামেলা নেই। দামও ভালো পাওয়া যায়। এজন্য গুদামে ধান দেননি।

সিরাজগঞ্জে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, বাজারে অনেক সময় ধান চালের দাম বেশি থাকায় কৃষকেরা গোডাউনে ধান দিতে চান না। তবু আমরা আশাবাদি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধান-চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা জানান বলেন, কয়েকটি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহের অনেকটা ভাটা পড়লেও অন্যগুলোতে সংগ্রহ চলছে।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সিরাজগঞ্জ,খাদ্যগুদাম
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close