কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
পলিতে ভরাট হরিহর নদ পানিবন্দি ৩ হাজার পরিবার
৪ দিনের ভারী বর্ষণ ও হরিহর নদ, বুড়িভদ্রা ও আপারভদ্রা নদী পলিতে ভরা হওয়ায় উপচে পড়া উজানের পানিতে যশোরের কেশবপুর পৌর সভাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রায় ১৫শ মাছের ঘের, ৩ শতাধিক পুকুর প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে প্লাবিত এলাকার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে টোংঘর তৈরি করে আশ্রয় নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। শুকনো স্থানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন ও অনেকে বাড়িঘর ছেড়েছেন।
জানা যায়, কেশবপুর পৌর এলাকার মধ্যকুল, ভবানিপুর, হাবাসপোল, কেশবপুর সাহাপাড়া, আলতাপোল, চারানিবাজার, মাছবাজার, সাবদিয়া, মাগুরাডাঙ্গা, বালিয়াডাঙ্গা, রাজনগর বাকাবরর্শী, সাগরদত্তশাটি, ডোঙ্গাঘাটা, মঙ্গলকোট এলাকা পাবিত হয়েছে। এসব এলাকার মধ্যে অন্তত ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ প্লাবিত হয়েছে। মধ্যকুল গ্রামের গৃহবধূ রেক্সনা খাতুন বলেন, শনিবার দুপুরের পর তাদের ঘরের বারান্দায় পানি উঠে এসেছে। অপর গৃহবধূ ফেরদৌসী জানান, প্রতি বছর হরিহর নদের উপচে পড়া পানিতে তাদের বাড়ি ঘর তলিয়ে যায়। ভবানিপুর গ্রামের আ. জলিল খান বলেন, তাদের এলাকা থেকে পানি সরার কোন ব্যবস্থা নেই। সাহাপাড়ার বাসিন্দা উৎপল দে জানান শনিবার বিকেলে তাদের ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। এলাকার পৌর কাউন্সিলার সাত্তার খান জানান, তার ওয়ার্ডে শনিবার প্রায় ১০০ পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পৌর সভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাহাপাড়া, সরদার পাড়া ও খান পাড়ায় পানি ঢুকে পড়েছে।
পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল বলেন, হরিহর নদ পলিতে ভরাট হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পৌর এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতাসহ বন্যা সৃষ্টি হয়। তার এলাকার প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিব›দি হয়ে পড়েছে। শনিবার বৃষ্টির পাশাপাশি হরিহর নদের পানি ঢুকে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাথ পাড়া, খান পাড়া, বিশ্বাসপাড়া, শেখ পাড়া, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাহাপাড়া, সরদার পাড়া ও খান পাড়ায় পানি উঠে এসেছে। ওই সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কেশবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দীন বলেন শনিবার তার ইউনিয়নের নিম্ন অঞ্চল পানিতে পাবিত হয়েছে। ভারি বৃষ্টি হলেই ওই সমস্ত এলাকার মানুষদের উচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিতে হবে।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সায়েদুর রহমান বলেন, আপার ভদ্রা নদির বড়েঙ্গা এলাকা খনন কাজ চলছে। হরিহর নদের জিরো পয়েন্ট প্রসস্ত করে কাটা হচ্ছে। খনন কাজ শেষ হলেই হরিহর নদ পাড় এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারি কমিশনার ভুমি মো. কবীর হোসেন প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, দ্রুত পানি নিস্কাশনে হরিহর ও আপারভদ্রা নদীর খনন কাজ চলছে।
"