জিয়াউল হক ইমন, চট্টগ্রাম

  ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯

১৪টি নান্দনিক স্মৃতিসৌধ নির্মিত হচ্ছে চট্টগ্রামে

ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে শহীদ মিনারকে আর জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রতীক চিহ্ন হিসেবে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে বিবেচনা করা হয়। এ কারণে রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারে নির্মিত হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা এবং যুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় স্মৃতিসৌধ। প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রীয় ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথার প্রতীক হিসেবে জাতীয় স্মৃতিসৌধের মতো চট্টগ্রামেও নির্মাণ হতে চলেছে ১৫টি স্মৃতিসৌধ। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন উপজেলার ১৫টি স্থানে ১৫টি স্মৃতি স্তম্ভের নির্মান কাজ চলছে, কাজ এরই মধ্যে প্রায় অর্ধেক শেষ হয়েছে। বাকি কাজ আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। স্মৃতিস্তম্ভটির নকশা ও ডিজাইন হবে আধুনিক ও নান্দনিক। নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে ১৪ স্মৃতিসৌধ এবং একটি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুস সালাম প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্মৃতিসৌধ দেখে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধকে জানবে, শিখবে এটাই মূল উদ্দেশ্য। স্মৃতিসৌধ নির্মাণে থাকছে নান্দনিকতার ছোঁয়া, যাতে নতুন প্রজন্মের কেউ দেখে আকৃষ্ট হয় এবং জানতে আগ্রহী হয়।

তিনি আরো বলেন, আমরা বিভিন্ন উপজেলায় প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণে। কারণ নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি এবং তাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানে না। নির্মিতব্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ থেকে শিখতে আগ্রহ জন্মাবে।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আগামী স্বাধীনতা দিবসের আগেই নির্মাণধীন স্মৃতিসৌধের কাজ শেষ হবে আশা করছি। আমরা কাজ শেষ করার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক ও তৎপর আছি।

মিরসরাই উপজেলায় দুটো শহীদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে। যার মধ্যে দুর্গাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে ও জোরারগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের সন্নিকটে ছুটিকা দিঘীর পাশে। সীতাকুন্ড উপজেলার মিত্রবাহিনীর সমাধিস্থল চন্দ্রনাথ মন্দিরগামী রাস্তার মহন্ত বাড়ির মূল ফটকের সামনে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পাশাপাশি একই উপজেলার ছোটকুমিরাতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের কাজ চলছে। এছাড়াও ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নের বিনাজুরীতে হত্যাযজ্ঞের স্থানে, হাটহাজারী উপজেলার অদুদিয়া মাদরাসা সংলগ্ন বধ্যভূমি সংরক্ষণ এলাকায়। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের বন কার্যালয়ের পেছনে গণকবর এলাকায়, রাউজান উপজেলায় হলদিয়া ইউনিয়নে ইয়াছিন নগরে, আনোয়ারা উপজেলায় জয়খালী বাজারের বধ্যভূমি সংরক্ষণ এলাকায়, বোয়ালখালী উপজেলার কদুরখীল প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায়, পটিয়া উপজেলার মুজাফ্ফরাবাদ বধ্যভূমিতে, বাঁশখালী উপজেলার গুনাগরি পুরনো ওয়াপদা বিল্ডিং সম্মুখে, সাতকানিয়া উপজেলার কাটগড় সাঙ্গবেলী বধ্যভূমিতে, চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী জামিরজুরী বধ্যভূমিতে এবং লোহাগড়া উপজেলার আমিরাবাদ মঙ্গলনগর ধরপাড়া বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close