শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় সরকারি গেজেট অনুযায়ী মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো উৎপাদন বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাকশ্রমিকরা। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমে এলে পুলিশ তাদের বাধা প্রদান করে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গতকাল সোমবার দুপুরে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় এ শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে।

শিল্প পুলিশ ও শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো কারখানায় প্রবেশের পর সরকার ঘোষিত গেজেট বাস্তবায়নের দাবিতে উৎপাদন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন শুরু করেন তৈরি পোশাকশ্রমিকরা। এ সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বুঝিয়ে কাজে যোগদান করানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টার দিকে আশুলিয়ার কাঠগড়া মোল্লাবাড়ি এলাকার এ আর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড, চারাবাগ এলাকার মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং মিলস লিমিটেড, লিলি অ্যাপারেলস, টেক্স টাউন গার্মেন্টস, এফজিএস ডেনিম গার্মেন্টসহ প্রায় ১৬টি কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় শ্রমিকরা কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর চালালে পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা প্রদান করেন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকরা পিছু হটে বাড়ি চলে যান। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২০ শ্রমিক আহত হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, মজুরি বোর্ড কর্তৃক ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। যে কারণে শ্রমিকরা না বুঝেই কাজ বন্ধ করে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন। দুপর ১২টার দিকে শিল্পাঞ্চলের কাঠগড়া এলাকায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কয়েকটি কারখানা এবং যানবাহনে ভাঙচুরের চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৮ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ১৬টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হলে উত্তেজিত শ্রমিকরা বাড়িতে চলে যান। এ ছাড়া অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

"