ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২০ মার্চ, ২০২৪

রিশাদকে নিয়ে অতি উৎসাহী হতে আগ্রহী নন শান্ত

লেগ স্পিন বিশ্বক্রিকেটে শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। শেন ওয়ার্ন থেকে বর্তমান সময়ের রশিদ খান, অ্যাডাম জাম্পা যুবেন্দ্র চাহাল, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারা লেগ স্পিন দিয়েই বিশ্বক্রিকেটে তারকা খ্যাতি পেয়েছেন। বাংলাদেশ দলেও খেলেছেন অনেক লেগ স্পিনার। তবে তারকা তো দূরের কথা, জাতীয় দলে থিতুই হতে পারেননি। জুবায়ের হোসেন লিখন থেকে শুরু করে তানভীর হায়দার, আমিনুল ইসলাম বিপ্লবরা জাতীয় দলে খেললেও আস্থার প্রতিদান নিতে পারেননি।

রিশাদ হোসেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে মানানসই বিশেষণ হবে ভেনি, ভিডি, ভিসি। এই ল্যাটিন শব্দত্রয়ীর অর্থ এলাম, দেখলাম, জয় করলাম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলে ফিরেই যেন নিজেকে নতুন করে চেনালেন তিনি। রিশাদ লম্বা সময় ধরেই আছেন বাংলাদেশ দলের রাডারে। ধারাবাহিকভাবে সুযোগ না পেলেও জমিয়ে রেখেছিলেন নিজের সেরাটা। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল রিশাদের। দুই ওয়ানডেতেই ছিলেন উইকেটশূন্য। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতেও বসে ছিলেন মাঠের বাইরে। তৃতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়ে বল হাতে নিলেন ১টি উইকেট। তবে ৬ উইকেট পতনের পর উইকেটে নেমে যে ব্যাটিংটা করলেন, তা এককথায় অবিশ্বাস্য। ১৮ বলে খেললেন ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস। এই ইনিংস খেলার পথে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার দুই ওভারেই নিয়েছেন ৪০ রান। অল্পের জন্য বঞ্চিত হয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি থেকে।

মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তার সপ্তম উইকেটে ২৫ বলে ৫৯ রানের জুটিই বাংলাদেশের জয়ের সঙ্গে সিরিজও নিশ্চিত করেছে। ম্যাচ শেষে তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে রিশাদ ব্যাটিংয়ে যে উন্নতি করেছেন, এটাই বেশি চোখে পড়েছে শান্তর। এরপরও রিশাদের উন্নতির অনেক জায়গা দেখছেন তিনি। এমন ক্রিকেটার দলে থাকলে অধিনায়কের কাজ সহজ হয়ে যায় বলে মনে করেন শান্ত।

তিনি বলেন, ‘প্রথমে তো বোলিংটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লেগ স্পিনার আমাদের নাই, ওর যদি শেষ নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে দেখা হয় আমার মনে হয় ভালো বোলিং করছে। সঙ্গে ব্যাটিংটা নিউজিল্যান্ড সিরিজে যেরকম ছিল সেখান থেকে আরো উন্নতি করেছে মনে হয়। তবু অনেক উন্নতির জায়গা আছে। ওটা নিয়ে কাজও করছে। অবশ্যই অনেক খুশি। এরকম প্লেয়ার দলে থাকলে তো অবশ্যই ক্যাপ্টেনের জন্য অনেক সহজ হয়।’ রিশাদ এই ম্যাচে বুঝিয়ে দিয়েছেন শুধু বোলিংই নয় প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও দলের প্রয়োজনে আস্থা হতে পারেন তিনি। লম্বা সময় ধরেই একজন লেগ স্পিনার আর একজন ফিনিশারের খোঁজে আছে বাংলাদেশ। রিশাদ হতে পারেন এই দুইয়ের সেরা কম্বিনেশন। অবশ্য এখনই রিশাদকে নিয়ে অতি উৎসাহী হতে মানা করে দিয়েছেন শান্ত। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ আমার মনে হয়, খুব ভালো ফিল্ডার (রিশাদ)। ব্যাটিংটা উন্নত হচ্ছে আস্তে আস্তে। বোলিংটা অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আজকেও যেভাবে বোলিং করেছে। মাঝে গুরুত্বপূর্ণ একটা উইকেট নিয়েছে। এটা অবশ্যই দলের জন্য ভালো। তবু এখনই খুব বেশি এক্সাইটেড হওয়ার প্রয়োজন নেই। অনেক উন্নতির জায়গা আছে।’ ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে সর্বপ্রথম আলোচনায় আসেন রিশাদ। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ কয়েকটি ম্যাচে নিজের ব্যাটে-বলের দক্ষতা প্রমাণ দিয়েছেন। তবু নিয়মিত ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। সর্বশেষ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) ৪টির বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। অবশ্য বল হাতে ৬টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এবার হয়তো রিশাদ ব্যাটিংয়ের জন্য হলেও সুযোগ পাবেন, সেটা আশা করাই যায়।

এদিকে রিশাদের বিধ্বংসী ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৬.৬৬। রান তাড়ায় কোনো ম্যাচে একজন ব্যাটার ৪০ বা এর চেয়ে বেশি রান করেছেন- এই বিবেচনায় ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশের সেরা ইনিংস। তিনি টপকে গেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে ২১০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় মোসাদ্দেক করেছিলেন অপরাজিত ৫২ রান। ২৭ বল খেলে তিনি মেরেছিলেন ২ চার ও ৫ ছক্কা। তার ইনিংসের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৯২.৫৯।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close