হাফিজ মুহাম্মদ

  ০৯ মার্চ, ২০২৪

ভ্রমণসঙ্গী বাবা

আবিদ ভ্রমণ করতে ভালোবাসে। রোজ বিকেলে বাবার সঙ্গে ঘুরতে যায়। গ্রামের মায়াবী দৃশ্য যে সত্যি অবাক করার মতো? যেন শিল্পীর আঁকা কারুকাজ! আঁকাবাঁকা মেঠোপথ, সুফলা-সুজলা শস্য-শ্যামল, গাছে গাছে পাখি ডাকছে, মাছরাঙাটা পানির ওপর ছোঁ মারছে, বলতে গেলে আরো কত কী? আর এসব কিছু ঘুরেফিরে দেখতে তার খুবই ভালো লাগে। কারণ বাবা হলো তার পথ ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ বন্ধু।

বাবার হাত ধরেই যেন হাঁটি হাঁটি পা বাড়া। বাবাকে নিয়েই কল্পনার জগতে একটা রঙিন স্বপ্ন বুনে। যাই হোক, সেবার গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে জ্বরে ভুগছিলাম। সব সময় কেমন জানি একটা অস্থির ভাব! তবে কিছুতেই আর ভালো লাগছে না। তখন আমাকে নিয়ে বাবা একটু চিন্তিত ছিলেন! কবে আমার জ্বর ভালো হবে? দেখতে দেখতে প্রায় কয়েক দিন কেটে গেল। তখনো আমি সুস্থ হইনি। এবার বাবা কিছুটা হতাশ হয়ে গেল।

আমাকে সান্ত¡না দিয়ে বলল, চিন্তা করো না আবিদ, তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে। আমি তো তোমার পাশে আছি, তবে ভয় কীসের? বাবা তখন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আমাকে পর্যাপ্ত সেবা করতেন। মাথায় জলপট্টি দিতেন আর সময়মতো ওষুধ খাওয়ায়?। তবে রাত হলে মজার মজার গল্প শোনাতেন। যাতে আমার সময় কেটে যায, একটু আনন্দ পাই, অসুস্থতা যেন ভুলে যাই।

সত্যি বলতে গেলে, আমার সেবা-যত্নের কোনো অভাব ছিল না। বাবা আমায় খুব ভালোবাসত। হঠাৎ আমি বাবাকে বলে উঠলাম- বাবা, আমি আর বাঁচব না, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে! আমার কথা শুনে বাবার চোখে জল গড়িয়ে এলো। আমাকে আবারও সান্ত¡না দিয়ে বলল, শোনো আবিদ, ওরকম কথা মুখে বলতে নেই! ওরকম কথা বললে আমি কষ্ট পাব যে! তুমি জানো, তোমার জন্য প্রতিদিন নামাজে বসে দোয়া করি; যাতে তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠো।

এবার সত্যি যেন বাবার দোয়া সৃষ্টিকর্তা কবুল করেছেন। তখন কিছুটা বুঝতে পারলাম, আমার প্রতি বাবার ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না। বাবার এ রকম ভালোবাসা পেয়ে আমি রাতারাতি সুস্থ হয়ে উঠলাম। আজ আমার খুবই ভালো লাগছে। এই রঙিন পৃথিবীটা যেন আবারও হাতের মুঠোয় ধরতে পেয়েছি। তবে জানি না, এ সুখ কোথায় থেকে এলো? তা একটু ভাবতে অবাক লাগে?

বাবার সঙ্গে ঠিক আগের মতো ঘুরতে বড্ড ইচ্ছে করছে। তখন বাবা রাজি হলেন। প্রতিদিনের মতো আমরা পথভ্রমণে বেরিয়ে পড়লাম। তখন আমার খুব ভালো লাগত। তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়? একটা কথা আজ জানতে পেয়েছি, পৃথিবীতে একমাত্র বাবা-ই বটবৃক্ষ। যার কোনো তুলনা হয় না?। আর সবার থেকে বাবা-ই একজন ভালো বন্ধু! তাই জীবন চলার পথে বাবার দেওয়া কিছু উপদেশ আজ-অবধি ভুলতে পারিনি। সেই সু-পথগুলো বারবার স্মরণ করি। যাতে এক দিন অনেক বড় মানুষ হতে পারি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close