নিজস্ব প্রতিবেদক ও মাদারীপুর প্রতিনিধি

  ২৩ জুন, ২০২২

পদ্মা সেতু উদ্বোধন

উচ্ছ্বাস সারা দেশে

স্বপ্ন দুয়ার খুলে যাবে আর এক দিন পরই। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না’, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটা দেখিয়ে দিয়েছেন আরেকবার। তিনি সংসদে ঘোষণা দিয়েছিলেন- নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু হবে; করেও দেখিয়েছেন তিনি- মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে গর্বের জাতীয় স্থাপনাটি। এখন স্বপ্নের সেতু উদ্বোধন উৎসবের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। দেশজুড়ে চলছে নানা আয়োজন, আলোচনা আর উৎসবের পরিকল্পনা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে স্মরণকালের সেরা উৎসব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর দুই প্রান্তে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতুর আদলেই তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। মঞ্চের ঠিক সামনে পানিতে ভাসতে থাকবে বিশাল আকৃতির একটি নৌকা। তার পাশে ১১টি খুঁটির ওপর ১০টি স্প্যান বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। দেখে মনে হবে সেতুর পাশ দিয়ে বড় একটি নৌকা চলছে। ২৫ জুন সেতু উদ্বোধনের পর ব্যতিক্রমী এ মঞ্চে উঠবেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে, মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে সাজগোজের কাজ। জনসভা ঘিরে তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে আলোকসজ্জার কাজ করছেন শ্রমিকরা। সভাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশাল এ আয়োজন ঘিরে পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ।

জেলা প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় জনসভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রায় ১৫ একর জমির ওপর ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মঞ্চের ভেতরে ও বাইরে বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা।

এদিকে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে জনসভাস্থলসহ পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেছেন, আকাশে হেলিকপ্টার, সেতুর দুই প্রান্তে স্পেশাল কমান্ডো টিমসহ উদ্বোধনস্থল এবং আশপাশের এলাকাজুড়ে থাকবে র‌্যাবের কড়া পাহারা। গতকাল বুধবার বিকাল ৩টার দিকে জনসভাস্থল শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

র‌্যাবের মহাপরিচালক বলেন, ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সব ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের প্রতিটি সদস্য তৎপর আছেন। র‌্যাব সদস্যদের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১ এবং সার্ভিস এরিয়া-২ এ র‌্যাবের পোশাকধারী সদস্যদের পাশাপাশি র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। সমাবেশস্থল, টোল প্লাজা, ফলক উন্মোচন স্থানসহ আশপাশে র‌্যাবের টহল তৎপরতা রয়েছে।’

র‌্যাবের মহাপরিচালক আরো বলেন, ‘অনুষ্ঠান চলাকালে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স, মোটরসাইকেল পেট্রোল, বোট পেট্রোল, অবজারভেশন ফোর্স থাকবে সার্বক্ষণিক। সেতুর দুই প্রান্তসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট থাকছে। আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকবে। সেতুর দুই প্রান্তে র‌্যাবের স্পেশাল কমান্ডো টিম প্রস্তুত থাকবে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের হেলিকপ্টারও প্রস্তুত আছে।’ এ সময় র‌্যাবের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close