reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০২ এপ্রিল, ২০২৪

দামের সঙ্গে ভাড়া সমন্বয় করতে হবে

ভোক্তাপর্যায়ে জ্বালানি তেলের দাম কমিয়েছে সরকার। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশে জ্বালানি তেলের এই দাম সমন্বয় করা হলো। ডায়নামিক প্রাইসিং ফর্মুলায় এপ্রিলের জন্য ডিজেলের বিদ্যমান বিক্রয়মূল্য ১০৮.২৫ লিটার থেকে ২.২৫ টাকা কমিয়ে ১০৬.০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া কেরোসিন ১০৮.২৫ থেকে ২.২৫ টাকা হ্রাস করে ১০৬.০০, অকটেন ১২৬.০০ এবং পেট্রল ১২২.০০ টাকা লিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে আরেক দফা দাম কমানো হয়। সে সময় প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৯ থেকে কমিয়ে ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা করা হয়েছিল। প্রতি লিটার অকটেনের দাম ১৩০ থেকে কমিয়ে ১২৬ টাকা করা হয়। পেট্রলের দাম প্রতি লিটার ১২৫ থেকে কমিয়ে ১২২ টাকা করা হয়েছে। সর্বনিম্ন দশমিক ৬৯ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ দাম কমানো হয়। জ্বালানির দাম কমানোটা ইতিবাচক। ইউক্রেন যুদ্ধের পর জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। জনসাধারণ সেই উচ্চমূল্যের ভার বহন করছে। প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করার যৌক্তিকতা আছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দাম কমবে, যদি যুদ্ধবিগ্রহ বাধে তাহলে বিপুল হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাবে- এটাই স্বাভাবিক। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, জ্বালানির দাম যা-ই কমুক না কেন সেটার প্রভাব পড়ে না বাজারে। জ্বালানি তেলের মূল্য বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগে ভোক্তাপর্যায়ে তেমন কোনো সুফল মিলছে না। তেলের দাম কমলেও পরিবহন ভাড়া কমে না কোথাও। কিন্তু দাম বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে ভাড়া বেড়ে যায়। এ অবস্থায় তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে বিকল্প উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থাৎ যখন বিশ্ববাজারে দাম কম এবং দেশে বেশি থাকে, তখন বাড়তি মুনাফা আলাদা তহবিলে রাখতে হবে। আবার যখন বিশ্ববাজারে দাম বাড়বে, তখন দেশে দাম না বাড়িয়ে ওই তহবিলের অর্থ দিয়ে সমন্বয় করতে হবে।

জ্বালানি তেলের দাম এক মাসেই দুদফা কমলেও গণপরিবহনের ভাড়া কমানোর বিষয়ে কোনো সুখবর নেই। যদিও গত ৩ মার্চ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছিলেন, জ্বালানির দাম কমলে গণপরিবহনের ভাড়াও কমবে। সেদিন গণপরিবহনের ভাড়া কমবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, আমার মনে হয় কমে যাওয়া উচিত। এখানে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, আমরা তাদের সঙ্গে বসার পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে, দেশে কমানো হয় না- এমন অভিযোগ থেকে বেরিয়ে আসছি আমরা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শুধু পরিবহনেই নয়, অন্য পরিবহনে ভাড়া কমার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। জ্বালানি তেলের দাম কমায় নিত্যপণ্যের দাম কমেনি বলে সাধারণ ভোক্তাদের অভিযোগ। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, কয়েক দিন পরই ঈদুল ফিতর। এ সময় প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরবে মানুষ। ফলে এ সময়েও পরিবহনে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার একটা প্রবণতা লক্ষ করা যায়। জ্বালানির দাম এই যে কিছুটা কমানো হলো, সেই প্রভাব এতে পড়বে কি না সেটাও সন্দিহান।

জ্বালানি তেল সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে পরিবহন খাতে। কিন্তু দাম কমানোর ফলে পরিবহন মালিকরা গণপরিবহনের ভাড়া কমানোর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, জ্বালানির দামের সঙ্গে খুব শিগগিরই পরিবহনের ভাড়া সমন্বয় করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close