reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ৩০ মার্চ, ২০২৪

ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হোক

জীবন রক্ষার জন্য ওষুধ অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এ ওষুধই এখন সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জরুরি প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম। এ দৌড়ে পেরে উঠছে না নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে ওষুধের দাম বৃদ্ধি যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। ওষুধের মূল্য যদি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে, তাহলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ।

বলাইবাহুল্য, কোম্পানিগুলো ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের। হৃদরোগ, কিডনির রোগ, গ্যাস্ট্রিক-আলসার, ক্যানসার, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অনেক রোগের ওষুধের মূল্যই সম্প্রতি কয়েকগুণ বেড়েছে। বেড়েছে অ্যান্টিবায়োটিক এবং বিভিন্ন ধরনের ভিাটামিনের দামও। এছাড়া নাপা বা প্যারাসিটামলের মতো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ওষুধের দামও বেড়েছে। মহামারি করোনার পর থেকে মূলত ওষুধের বাজার লাগামহীন হয়ে পড়ে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির আর সীমা থাকবে না। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ওষুধের দাম বাড়ার ফলে নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষকে মাসিক ওষুধের খরচ সমন্বয় করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকের একাধিক শারীরিক সমস্যা থাকে। সেজন্য বছরের পর বছর ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। ওষুধের দাম বেড়ে গেলে সংসারের অন্যান্য খরচের সঙ্গে সমন্বয় করতে তাদের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি হয়। তা সত্ত্বেও টনক নড়ছে না ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের। ৩০ বছর আগের গেজেট বহাল থাকায় ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না সরকার। কারণ গেজেটেই নির্ধারিত আছে ১১৭টি জেনেরিক ওষুধের বাইরে দাম বাড়লে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়টি। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের দামে লাগাম টানতে হলে গেজেটে সংশোধনী আনতে হবে আগে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের দাম বৃদ্ধির কারণগুলোর মধ্যে যদি কাঁচামালের দাম বেড়ে যায় ও শুল্ক যদি বেশি বসায়, তাহলে দাম বাড়তে পারে। কিন্তু সরকার যাদের ওষুধ আমদানির লাইসেন্স দিয়েছে, তাদের প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যয় খুবই সামান্য। সুতরাং ওষুধের দাম স্থিতিশীল রাখা সম্ভব। এজন্য দুটি কাজ করা প্রয়োজন, একটি বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা কার্যকর করা এবং আগের আইন বদলে ফেলা। পাশাপাশি নীতিমালা ঠিক করতে হবে। তারা কখন কী কারণে দাম বাড়াবে, সেটা জানাতে হবে এবং বাড়ালে সরকারের অনুমতি নিতে হবে- এমন নীতিমালা করতে হবে। তাহলে ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের ইচ্ছামতো দাম বাড়াতে পারবে না। উদ্বেগের বিষয়, আইনের দুর্বলতার কারণেই ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। এজন্য আইন সংশোধন করা প্রয়োজন। কেউ যদি ওষুধের সংকট তৈরি করে বা বেশি দাম নেয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

মনে রাখতে হবে, ওষুধ কোনো বিলাসী ভোগ্যপণ্য নয়। এর ওপর মানুষের জীবন-মরণ নির্ভর করে থাকে। এক্ষেত্রে ক্রেতার স্বার্থ রক্ষা করাই অনেক বেশি জরুরি। অযৌক্তিকভাবে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। লাগামহীনভাবে যদি ওষুধের দাম বাড়তেই থাকে, তাহলে সাধারণ রোগী- যারা স্বল্প আয়ের এবং প্রবীণ অবসরে আছেন, তাদের অবস্থা কী হতে পারে? সরকারকে অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। দ্রুতই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close