reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ জানুয়ারি, ২০২৪

দুর্ঘটনা রোধে চালকদের সচেতনতা বাড়াতে হবে

শীতকালে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ কুয়াশা। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘন কুয়াশায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। এতে হতাহতও কম নয়। গত শনিবার এক দিনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ১৪ জনের প্রাণ গেছে সড়কে।

সরকারের নানা প্রতিশ্রুতি ও উদ্যোগের পরও সড়কে প্রাণহানি কমছে না। উল্টো শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশা ও অদক্ষ চালকের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে সড়কে প্রাণহানি বেড়েছে। সরকারি হিসাবেই, গত বছর দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্র বলছে, গত বছর প্রতিদিন সড়কে গড়ে ১৪ জনের প্রাণ গেছে। তবে বেসরকারি সংগঠনগুলোর হিসাবে এ মৃত্যুর সংখ্যা দিনে গড়ে ১৭ জন। শীতকালে স্বাভাবিকভাবেই প্রকৃতিতে কুয়াশা জেঁকে বসে। আর এতে বিপত্তিতে পড়ে সড়ক ও মহাসড়কে চলাচল করা যানবাহন। এ সময় বেড়ে যায় দুর্ঘটনা। চলতি বছরের পৌষ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে কনকনে শীতের পাশাপাশি বেড়েছে কুয়াশার ঘনত্ব। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা। হাইওয়ে পুলিশ সব ধরনের চালকদের কুয়াশায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সতর্ক করলেও তা মানতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে একের পর এক ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘন কুয়াশার কারণে শীত মৌসুমে দুর্ঘটনা বেড়েছে। এর কারণ- তীব্র গতিতে গাড়ি চালানো, ঝুঁঁকিপূর্ণ ওভারটেক আর ভাঙাচোরা সড়ক।

কুয়াশার কারণে রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় অনেক ক্ষেত্রে সামনের গাড়ি দেখা বা এর দূরত্ব আঁচ করা যায় না। এ ছাড়া দেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চালকরা গাড়ি চালানোর নির্দেশনা পুরোপুরি মেনে চলেন না। কুয়াশায় দুর্ঘটনার এগুলোই বড় কারণ। ঘন কুয়াশায় দুটি লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালানোর নির্দেশনা থাকলেও দেখা যায় কেউ একটি জ্বালিয়ে গাড়ি চালান। কেউ কেউ লাইট না জ্বালিয়েই গাড়ি চালিয়ে থাকেন। কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে গেলে গাড়ি না চালিয়ে রাস্তার পাশে নিরাপদে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করাটা জরুরি। কুয়াশা পরিষ্কার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে দৃষ্টিসীমা স্বাভাবিক হলে তারপর গাড়ি চালানো উচিত। এসব নিয়মকানুন মানার প্রবণতা অনেক চালকেরই নেই। বেশির ভাগ চালকই বেপরোয়া মনোভাবের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে সকালের দিকে কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা বেশি হয়। কারণ এ সময় চালকদের ঘুম না হওয়ার কারণে ঝিমঝিম ভাব থাকে, আর সেই সঙ্গে কুয়াশা থাকার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁঁকিও বাড়ে। কুয়াশায় গাড়ি ধীরে চালানোর নিয়ম থাকলেও যাত্রী বেশি পাওয়ার লোভে কিংবা যাত্রীদের চাপ থাকার কারণে অনেক সময় তাদের গাড়ির গতি কমানো হয় না। যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এ ছাড়া মালবাহী যানবাহন রাত এবং সকালের একটি নির্দিষ্ট সময়ে শহরাঞ্চলে প্রবেশ ও বের হওয়ার নিয়ম থাকার কারণেও অনেক সময় চালকরা গতি কমিয়ে গাড়ি চালাতে আগ্রহী হন না। এমন নানা কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।

সড়কে দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনার জন্য দক্ষ চালক তৈরির কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া চালকদের সচেতন করারও বিষয় আছে। শুধু চালক নয় বরং মালিকপক্ষ, যাত্রী এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে যে কুয়াশায় গাড়ির গতি কমিয়ে সাবধানে চালাতে হবে। সব পক্ষই সচেতন হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close