reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ মে, ২০২৩

নতুন প্রজন্মকে হতে হবে পরিবর্তনের কারিগর

উন্নয়নশীল বিশ্ব বলতে আমাদের প্রজন্ম বিশ্বের যে অংশকে চেনে, একুশ শতকে সেই অংশেই আনুপাতিকভাবে সবচেয়ে বেশি বস্তুগত অগ্রগতি হয়েছে। এই অগ্রগতি বহুমাত্রিক। মাথাপিছু আয়, গড় আয়ু, স্বাস্থ্য ও সাক্ষরজ্ঞান বাড়া, তীব্র দারিদ্র্য ও চরম দুর্দশা- আনুপাতিক হারে কমে আসা এই অগ্রগতির প্রধান দিক। অতিসাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিস্ময়কর ধারাবাহিকতায় সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন ঘটেছে। ইউরোপ ও তার আশপাশের দেশগুলোর উপকূলে শরণার্থীদের ভাসমান মৃতদেহের বীভৎস দৃশ্য, সন্ত্রাসবাদের অবিরাম তৎপরতা, দেশে দেশে যুদ্ধ-সংঘাতের ফলে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ বেড়ে যাওয়া- এসব যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। বিশ্বজুড়ে নানা সংকট এখন প্রকট আকার ধারণ করছে। বিশেষত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা যেন আরো ভয়াবহ রূপ নিতে যাচ্ছে।

সত্যিকার অর্থে কেউ এমন বিশ্ব চায়নি বা চায়ও না। আমাদের ভবিষ্যৎ কেমন হবে সেই রূপরেখা এখনই তৈরি করা দরকার। সেসব বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে এখনই। সেই সুন্দর আগামী নির্মাণের জন্য নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব নিয়েই এগিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সে বিষয়টিই শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দিলেন। তিনি গত মঙ্গলবার কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত ‘বাংলাদেশ : একটি উন্নয়ন মডেল : শেখ হাসিনার কাছ থেকে শেখা’ শীর্ষক অধিবেশনে নতুন ও ভবিষ্যৎকে আলিঙ্গন করার মানসিকতা নিয়ে পরিবর্তনের কারিগর হওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীদের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নেতৃত্বের উদাহরণ সৃষ্টি করুন এবং পরিবর্তনের কারিগর হোন।’ তার এ আহ্বান মূলত আগামী বিশ্বে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে একটি শান্তিময় বিশ্ব গড়ে তোলার। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করুন, আপন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি মনোনিবেশ করুন এবং দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করুন। আপন লোকজন এবং দলের ওপর বিশ্বাস রাখুন। আপনার মাতৃচেতনাকে জাগ্রত করুন এবং নতুন ও ভবিষ্যৎকে আলিঙ্গন করুন।’

কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেওয়ার জন্য তিন দিনের সরকারি সফরে দোহায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা তার দীর্ঘ বক্তৃতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সংগ্রামের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি জ্ঞানভিত্তিক, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশে একটি স্মার্ট সরকার, একটি স্মার্ট অর্থনীতি, একটি স্মার্ট জনসংখ্যা, একটি স্মার্ট সমাজ এবং স্মার্ট জনশক্তি থাকবে। জনগণকে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে দক্ষ করে তোলা হবে যাতে তারা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে অবদান রাখতে পারে। স্মার্ট বাংলাদেশের উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা। লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করছি। সারা দেশে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার এবং হাই-টেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী নতুন ও ভবিষ্যৎকে আলিঙ্গন করার মানসিকতা নিয়ে পরিবর্তনের কারিগর হওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন তা শুধু কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি নয়, সে আহ্বান বৈশ্বিক। একটি শান্তিময় বিশ্ব গড়ে তুলতে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আশা করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই আহ্বানে নতুন প্রজন্ম সাড়া দেবে এবং নতুন আগামী গড়তে এগিয়ে যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close