আদালত প্রতিবেদক

  ২৯ মার্চ, ২০১৭

খালেদাকে ১০ এপ্রিল হাজিরের নির্দেশ

রাষ্ট্রদ্রোহ ও নাশকতার ১১ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ১০ এপ্রিল হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। খালেদার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকার দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা গতকাল মঙ্গলবার এই দিন ঠিক করে দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি তাপস পাল।

১১ মামলার মধ্যে রাজধানীর দারুস সালাম থানার আটটিতে নাশকতার অভিযোগ আনা হয়েছে। আর যাত্রাবাড়ী থানার মামলা রয়েছে দুটি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাটি দায়ের করেছিলেন ঢাকার হাকিম আদালতে। ঢাকা দায়রা জজ আদালতে যাত্রাবাড়ী থানার একটি মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের দিন ছিল গতকাল মঙ্গলবার। আর বাকি ১০ মামলা অভিযোগ গঠনের শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।

খালেদার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ম্যাডাম অসুস্থ। তা ছাড়া মামলাগুলোর সব নথির সত্যায়িত অনুলিপি আমরা এখনো পাইনি। এ কারণে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আরো সময়ের আবেদন করা হয়। এর আগে গত ১৪ মার্চ এই ১১ মামলার তারিখ থাকলেও সেদিন সকালে খালেদার হঠাৎ অসুস্থতার কথা বলে সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। পরে বিচারক ২৮ মার্চ নতুন দিন ঠিক করে দেন।

রাষ্ট্রদ্রোহ : ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় খালেদা মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, আজকে বলা হয়, এত লাখ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে, আসলে কত লাখ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানা রকম তথ্য আছে। ওই বক্তব্যে ‘দেশদ্রোহী’ মনোভাবের পরিচয় রয়েছে অভিযোগ করে গত বছরের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার হাকিম আদালতে খালেদার বিরুদ্ধে মামলা করেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। ওই মামলা করার আগে তিনি নিয়ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিও নেন।

ওই মামলায় পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা গত বছর ১০ আগস্ট অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য প্রথমবার দিন ঠিক করে দেন। এরপর সেই শুনানি আরো কয়েক দফা পিছিয়েছে।

দারুস সালামের আট মামলা : দশম সংসদ নির্বাচনের বছরপূর্তিতে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করতে বাধা পেয়ে দলীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় থেকে সারা দেশে লাগাতার অবরোধ ডাকেন খালেদা জিয়া।

৯০ দিনের এই কর্মসূচিতে বহু গাড়ি পোড়ানো হয়, অগ্নিসংযোগ হয় বিভিন্ন স্থাপনায়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান প্রায় দেড় শ মানুষ। তখন নাশকতার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অসংখ্য মামলা করে। তার মধ্যে দারুস সালাম থানায় দায়ের করা নয়টি মামলায় খালেদাকে হুকুমের আসামি করা হয়, যার মধ্যে আটটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইনের। গত বছর মে ও জুন মাসে খালেদাসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের আসামি করে এসব মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর ১০ আগস্ট ঢাকার ১ নম্বর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের আট মামলায় জামিন পান খালেদা জিয়া। সবগুলো মামলাই অভিযোগ গঠনের শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।

যাত্রাবাড়ীর মামলা : বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা লাগাতার অবরোধ-হরতালের মধ্যে ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি ঢাকার যাত্রাবাড়ীর কাঠের পুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের একটি বাসে পেট্রলবোমা ছোড়া হলে অগ্নিদগ্ধ ও আহত হন ৩০ জন। এর মধ্যে নূর আলম নামে এক ঠিকাদার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার এসআই কে এম নুরুজ্জামান দুটি মামলা করেন, যাতে অবরোধ আহ্বানকারী বিএনপি চেয়ারপারসনকে করা হয় হুকুমের আসামি। তদন্ত শেষে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বশির উদ্দিন গত বছরের ৬ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে খালেদাসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist