নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২১ মার্চ, ২০২৪

শিমরাইলের ভোগান্তি সমাধান কি অধরা!

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ

দেশব্যাপী ভোগান্তির আলোচনায় এখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়। এই ব্যস্ত মোড়টি জনবহুল এবং পূর্বাঞ্চলের ১৮টি জেলার প্রবেশপথ। শিমরাইল মোড়ে রয়েছে শতাধিক যাত্রীবাহী বাসের টিকিট কাউন্টার। প্রতিদিন হাজারো যাত্রী চলাচল করেন। অথচ এখানে পথ না পেয়ে সড়কের মাঝেই চালকরা বাস থামান আর যাত্রীদের উঁচু ডিভাইডার্স পার হতেই হয়, কারণ চারলেনের সড়কে দূরপাল্লার অংশ থেকে আঞ্চলিক অংশে যাওয়ার আর কোনো পথ নাই। ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজে সবচেয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন নারীরা। দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

এর আগে, টাকার বিনিময়ে মই দিয়ে পাঁচ ফুট উঁচু সড়ক ডিভাইডার্স পার করার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচনায় আসে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ খবর ভাইরাল হয়ে যায়। মই দিয়ে মহাসড়কের ডিভাইডার্স পারাপারকারীকে আটক করা হয়। এত কিছু করার পরও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা জানান, মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম পাশ থেকে মাদানীনগর মাদরাসার সামনে পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাঝখানে শিমরাইল মোড়। অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস এখানে থামাতে হয়। এতে যাত্রী ও গাড়ির কারণে সৃষ্টি হয় যানজট। আর যানজট নিরসনে গত বছরের মাঝামাঝি নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ মহাসড়কটির ওই গুরুত্বপূর্ণ অংশে উঁচু তিনটি ডিভাইডার দিয়ে চারটি লেন করেন। তার মধ্যে দূরপাল্লার যানবাহনের জন্য দুটি ও অঞ্চলিক পরিবহনের জন্য দুটি। কিন্তু সড়কের ওই অংশে ডিভাইডার দিলেও কোথাও কোনো ফাঁকা রাখা হয়নি। এতে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচলের লেন থেকে আঞ্চলিক লেনে যাওয়ার কোনো পথ রাখা হয়নি। আগে শিমরাইল মোড়ের সওজ কার্যালয় ও প্রিয়ম টাওয়ারের সামনে ডিভাইডারের কিছু অংশ বড় ফাঁকা ছিল। গত মাস দুয়েক আগে ওই ফাঁকা অংশটুকু বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দূরপাল্লার যাত্রীরা বাস থেকে নেমে ডিভাইডার টপকিয়ে সড়ক পারাপার হচ্ছেন। এদিকে যাত্রীদের এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু লোকজন কয়েক সপ্তাহ ধরে ডিভাইডারে মই লাগিয়ে যাত্রী পারাপারের ব্যবসা শুরু করেন।

মুন্না নামে একজন যাত্রী বলেন, কাঁচপুর ব্রিজের এখানে নামলে ১ কিলোমিটর হাঁটতে হবে। হেঁটে শিমরাইল মোড়ে এলেও মালামাল নিয়ে এপার থেকে ওপারে যাওয়া যায় না।

শাহ আলম নামে আরেক যাত্রী বলেন, বারবার নিষেধ করার পরও আমাকে বাস থেকে সড়কের মাঝখানে নামিয়ে দিয়েছে। এখন কী করব। টপকিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। হানিফ পরিবহনের বাসচালক মোসলিম উদ্দিন বলেন, এখানে কোনো ফাঁকা নেই, তা আমার জানা ছিল না।

হাইওয়ে থানার সড়ক ও জনপথের ইনচার্জ আনসার কমান্ডার মতিউর রহমান বলেন, শিমরাইল মোড়ে অনেক উঁচু ডিভাইডার। পার হওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই বাসের চালকদের নিষেধ করা হচ্ছে এখানে যাত্রী না নামাতে। যাত্রীদের বলা হচ্ছে এখানে না নামতে। কিন্তু কেউ কথা শুনছেন না।

হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ টিআই এ কে এম শরফুদ্দিন বলেন, যাত্রীরা যেন ডিভাইডার টপকিয়ে সড়কের মাঝখান দিয়ে পারাপার হতে না পারে সেজন্য পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমাদের কয়েকজন অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যকে সড়কে মোতায়েন করেছি। মই দিয়ে কেউ যেন লোকজনকে ডিভাইডার পার করতে না পারে আমরা সেদিকে নজর রাখছি।

নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, আমাদের কাজ সড়ক নির্মাণ করা। গাড়ি কোথায় থামবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। যাত্রী বা গাড়ি চলাচল দেখার দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের। তবু জনস্বার্থে আমরা ডিভাইডারের ওপরে লোহার গ্রিল দিয়ে বেড়া দিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close