ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভুটানকে উড়িয়ে ফাইনালের প্রস্তুতি সারলেন মেয়েরা

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে গতকাল ভুটানের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। খেলায় জোড়া গোল করেছেন মোসাম্মৎ ঐশি খাতুন। বাকি দুটি গোলের একটি নুসরাত জাহান মিতুর, অন্যটি শ্রীমতি তৃষ্ণা রানীর। টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে ১০-০ ব্যবধান, নেপালের বিপক্ষে ১-০ এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪-০ গোলে হেরে বিদায় নিল ভুটান।

খেলার ১৮ মিনিটে আক্রমণে ওঠেন মোসাম্মৎ সুলতানা আক্তার। বক্সে ঢুকে অবশ্য জটলার মধ্যে পড়ে যান তিনি। ভুটানের গোলপোস্টের সামনে বেশ কয়েকবার বল ঘোরাঘুরি করল একে অপরের পায়ে। শেষ পর্যন্ত পেছনে থাকা নুসরাত জাহান মিতু ডান পায়ের জোড়ালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন। ম্যাচে লিড নেয় বাংলাদেশ।

তিন মিনিট পর মিতুর বাড়ানো পাস ধরে ডান পাশ দিয়ে আক্রমণে ওঠেন উমেহ্লা মার্মা। তবে কর্নারের বিনিময়ে বল ক্লিয়ার করেন ভুটানের ডিফেন্ডার কেলজাং শেরিং ওয়াং। কর্নার নিতে আসেন মিতু। তার শটটি বক্সের মধ্যে এবারও জটলার সৃষ্টি করে। যদিও প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের দৃঢ়তায় এবার গোল পায়নি বাংলাদেশ।

এ যাত্রায় না পেলেও গোলের আক্ষেপ মেটে খেলার ৩০ মিনিটে। সেই কর্নার থেকেই লিড বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। মিতুর নেওয়া কর্নার কিক থেকে মোসাম্মৎ ঐশি খাতুনের সরাসরি হেডে গোল পায় বাংলাদেশ। তাতে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় জুনিয়র বাঘিনিরা।

গোলের দারুণ সুযোগ আসে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। মাঝ মাঠের নিচে থেকে লং পাসে ঐশিকে বল বাড়িয়ে দেন রিতু আক্তার। দারুণভাবে বল রিসিভ করে গোলরক্ষককে কাটান তিনি। এরপর প্রতিপক্ষের দুজন ডিফেন্ডারের বাধার মুখে পড়লেও তাকে আটকে রাখা যায়নি। যদিও ফাকা গোলে শট নিতে দেরি করে ফেলেন। এরপর কোনাকুনি শট নিয়েছেন বটে, তবে উঠে এসে তার দুর্বল শটটি সহজেই আটকে দেন গোলরক্ষক দিশা রাই।

বিরতির পর ৪৯ মিনিটেই ভালো সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ডান পাশ দিয়ে অনেকটা দূর থেকে গোলে শট নেন সুলতানা। ভুটনারে গোলরক্ষক ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে না পারলে বক্সের সামনে বল পেয়ে যান উমেহ্লা। শট নিতে পারলেই নিশ্চিতপ্রায় গোল, কিন্তু সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি এই ফরওয়ার্ড। তবে ৫৭ মিনিটে আর ভুল করেননি শ্রীমতি তৃষ্ণা রানী। ডান পাশ দিয়ে উমেহ্লার পাস ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন ঐশি। গোলের সামনে থাকা তৃষ্ণাকে পাস দেন তিনি। বাঁ পায়ের আলত টোকায় স্কোরলাইন ৩-০ করেন তৃষ্ণা।

খানিকবাদে ৬১ মিনিটের মাথায় প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার সিন্দু পেলজুমের ভুলে ব্যবধান আরো বাড়ায় বাংলাদেশ। ভুটানের গোলরক্ষক বল বাড়িয়ে দেন এই ডিফেন্ডারের কাছে। কিন্তু ব্যাক পাস করতে গিয়ে গোলরক্ষকের কাছে বল পৌঁছাতে পারেননি তিনি। পাশে থাকা ঐশি এসে হালকা টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন। ম্যাচে এটি ছিল তার দ্বিতীয় গোল। বাংলাদেশের লিড ৪-০।

৬৮ মিনিটে এই ম্যাচে উল্লেখ করার মতো আক্রমণে ওঠে ভুটান। অনেকটা একাই বল নিয়ে এগিয়ে যান নিমা শেলডন। কিন্তু স্বর্না রানী মন্ডলের বাধা টপকাতে পারেননি তিনি। টুর্নামেন্টে একটিও গোল করতে না পারা ভুটান এদিন শেষ দিকে দারুণ প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু সজাগ বাংলাদেশি ডিফেন্ডাররা সে প্রচেষ্টা বারবারই ব্যর্থ করে দেন। শেষ দিকে মেজাজ হারান অতিথি দলটির খেলোয়াড়রা। লেগে যায় বাংলাদেশি মিতুর সঙ্গে। রেফারি এসে পরে মীমাংসা করে দেন।

এর আগে বিকেলে রাউন্ড রবিন লিগের শেষ খেলাটি দুদলের জন্যই ছিল ফাইনাল নির্ধারণী ম্যাচ। এমন ম্যাচে নেপালকে ৪-০ গোলে হারিয়ে সাফের ফাইনালে বাংলাদেশের সঙ্গী হয়েছে ভারত। ম্যাচে জোড়া গোল করেন নেহা। একটি করে গোল পেয়েছেন সুলাঞ্জনা রাউল এবং সিন্দি।

খেলার ৫৩ মিনিটে শিবানি দেবির লং পাস থেকে গোল করে ভারতকে লিড এনে দেন নেহা। ৮০ মিনিটে বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে লং শটে খেলায় দ্বিতীয়বার লক্ষ্যভেদ করেন ভারতীয় নাম্বার নাইন। গোল শোধ দিতে মরিয়া নেপালকে ফের হতাশায় ডুবায় ভারত। ৮৫ মিনিটে আক্রমণে ওঠে ভারত। কিন্তু গোলরক্ষক বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। এরপর বক্সে থাকা সুলাউঞ্জনা নেপালের জাল কাঁপিয়ে দেন। ম্যাচের যোগ করা সময়ে নেপালকে চূড়ান্ত হতাশায় ডোবান সিন্দি। বদলি হিসেবে নামা সিন্দির গোলের পরই ম্যাচের শেষ বাশি বেজে ওঠে। তাকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশকে মোকাবিলা করবে ভারত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close