আরিফ খান, বেড়া (পাবনা)

  ০৩ জুন, ২০২৩

বাড়ির ছাদে জাদুঘর

বাংলাদেশকে বলা হয় সকল দেশের রানি। প্রিয় জন্মভূমির রূপের কথা ভাষায় বলে বোঝানো হয়তো সম্ভব নয়, কিন্তু প্রিয় জন্মভূমির রূপ দেখে মন ভরে যায়। বাংলার বুকে ঐতিহ্যবাহী জেলা পাবনার বেড়া উপজেলায় রয়েছে ১৩টি জমিদার বাড়ি। রয়েছে ক্ষেতুপাড়া জমিদার বাড়ি, দুলাইয়ে আজিম চৌধুরীর বাড়ি, মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি ও মানসিক হাসপাতাল।

কিন্তু শিশু-কিশোরদের জন্য তেমন কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। এমন বিষয় থেকেই পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে বাড়ির ছাদে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন কৃত্রিম চিড়িয়াখানা, মিনি শিশুপার্ক ও জাদুঘর। চিড়িয়াখানা ও জাদুঘর দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে দেখতে আসেন দর্শনার্থীরা। সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়ায় আশপাশের প্রায় ৫০টি গ্রাম থেকে দর্শনার্থীরা আসেন এ পার্কে। প্রতিদিন বিনোদন কেন্দ্রটি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে।

জানা যায়, কাশিনাথপুর এলাকার জহির নামে এক ব্যবসায়ী ২০২০ সালে কাশিনাথপুর বাজারে পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের পাশেই তার নিজ মার্কেটের তৃতীয় তলায় চিড়িয়াখানা, মিনি শিশুপার্ক ও দ্বিতীয় তলায় জাদুঘরটি নির্মাণ করেন। চিড়িয়াখানায় রয়েছে বানর, লেইল, বেজি, কাঁঠবিড়ালি, খরগোশসহ বেশকিছু প্রাণী। এখানে সবকিছুই কৃত্রিম যেমন বাঘ, সিংহ, হরিণ, উট, হাঙর, শিয়াল, ময়ূর, পেঙ্গুইন, পেঁচা, ডলফিনার, ঈগল, পরী, গ-ার, শিম্পাঞ্জী, হাতি, ঘোড়া, জেব্রাসহ বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য।

শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন রাইড। জাদুঘরে রয়েছে হারিয়ে যাওয়া কৃষি ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী। যেমন কোদাল, কাস্তে, লাঙ্গল, দা, টিভি, শিল পাটা, কলের গান, হুক্কা, ক্যাসেট, রেডিও, মাথাল, গাছ কাটার করাত, দুধ মাপার বাঁশের চোঙ্গা, হ্যাজাক, একতারা, কাঠের তৈরি পায়ের খড়ম, ঝাঁকা, চাল মাপার কাঠা, বাঁশের তৈরি গরুর মুখে ব্যবহার করা টুনাসহ প্রায় এক হাজার সামগ্রী।

শিশুপার্ক ও জাদুঘরটি সম্পর্কে জানতে কাশিনাথপুর বাজারের দোকানি কাজল জানান, জহির ভাই একজন শৌখিন ও ভালো মনের মানুষ। অনেক কষ্ট করে তিনি শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক ও জাদুঘরটি তৈরি করেছে। ছুটির দিনে আশপাশের ও দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোকজন শিশুদের নিয়ে এখানে ঘুরতে আসেন।

দর্শনার্থী জানিক শেখ বলেন, ‘আমার ছোট ছেলেমেয়ে অন্যদের কাছে শুনে বায়না ধরেছে কাশিনাথপুর পার্কে ঘুরতে যাবে। তাই ওদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। অল্প জায়গার মধ্যে খুব সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে পার্কটি। কৃত্রিম চিড়িয়াখানা, মিনি শিশুপার্ক ও জাদুঘরটি দেখতে কোনো টাকা পয়সা লাগে না। শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশে এটা বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

পার্কের মালিক জহির জানান, শিশু-কিশোরদের বিনোদনের ব্যবস্থা ও হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দিতে আমার সামান্য এ আয়োজন মাত্র। ভবিষ্যতে এটাকে আরো বড় আকারে করার চিন্তাও রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close