সিলেট প্রতিনিধি

  ২২ মে, ২০১৮

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের অভিযোগ

(সিকৃবিতে) ১১ পদে নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল গত শনিবার। এজন্য আবেদনকারীদের ডাকাও হয়েছিল। ওই দিনই হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব পদে বাছাই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। অভিযোগ উঠেছে এই নিয়োগ নিয়ে বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের স্বার্থের দ্বন্দ্বে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রকটর বলেছেন, এক্ষেত্রে ছাত্রলীগের কোনো ভূমিকা নেই। ছাত্রলীগও এ ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার কথা নাকচ করেছে।

জানা গেছে, সিকৃবি ছাত্রলীগের ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। অতীতেও শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগের সত্যতা পায়। পাশাপাশি শিক্ষক পদে ইউজিসির অনুমোদনপ্রাপ্ত নতুন ২৪ জন ও কর্মকর্তা পদে আরও সাতজনের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও ছাত্রলীগের চাপে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা উপদেষ্টা, অর্থ শাখা এবং তিনটি হলে প্রশাসনিক বা সমমানের কর্মকর্তার ১১ পদে গত শনিবার নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। গত ৫ এপ্রিল এসব শূন্য পদে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ। গত বছর ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা এবং সরকারি দল সমর্থক একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারের চাপে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব পদে ১২ জনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করেই এ তিনজন পদগুলো ভাগাভাগি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এ পদে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় তারা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

এ নিয়োগ নিয়ে কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। গত বৃহস্পতিবার একপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ঋত্বিক দেবকে ক্যাম্পাসে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে। এমন পরিস্থিতিতে গত শনিবার নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও সকালে নতুন নিয়োগের দাবিতে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। তারা অভিযোগ করেন, আবেদনকারীদের আগেভাগে না জানিয়েই নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তাদের অভিযোগ আবেদনকারীদের কাউকে মোবাইল ফোনে, কাউকে এসএমএস দিয়ে, আবার কাউকে পরীক্ষার দিন সকালে এসে নিয়োগ পরীক্ষার কার্ড নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারর (সংস্থাপন) মো. শাহ আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, কতজনকে নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছে, তার সত্যিকারের হিসাব বলতে পারব না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে একজন সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) পদেই ৫৫ জনকে ডাকা হয়েছিল। এছাড়া প্রক্টর, উপদেষ্টা (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা), পরিকল্পনা ও উন্নয়ন এবং তিনটি হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা সমমানের পদগুলোতে পাঁচ থেকে নয়জন করে শতাধিক আবেদনকারীকে ডাকা হয়েছিল।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছর যে ১২ জন কর্মকর্তাকে অ্যাডহক বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়, তার মধ্যে চারজনই সিকৃবি ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তারা হলেন সিকৃবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি কামরুল ইসলাম, হল শাখার সহসভাপতি ডা. কানন দাস, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সম্পাদক সৌরভব্রত দাস এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শামিম মোল্লা এ প্রসঙ্গে বলেন, গত বছর ছাত্রলীগের চারজন নেতা নিয়োগ পেয়েছেন চুক্তিভিত্তিতে। এ ক্ষেত্রে ভাগাভাগির কোনো বিষয় ছিল না। সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিষয়টি বিবেচনা করতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিলাম। ছাত্রলীগের চাপে শনিবারের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আবেদনকারীদের সঠিক প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়নি, এজন্য অনেকে বিক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এদের মধ্যে ছাত্রলীগের কেউ থাকলেও তারা মূলত চাকরিপ্রার্থী বলে দাবি করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সকালে তা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল ইসলাম জানান, পরীক্ষা স্থগিতে ছাত্রলীগের কোনো চাপ ছিলনা। কর্তৃপক্ষ সঙ্গত কারণে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে। আলোচনা করে অচিরেই পরীক্ষার পরবর্তী তারিখ জানানো হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist