আদালত প্রতিবেদক

  ২১ অক্টোবর, ২০২১

জাপানি মা ও বাংলাদেশি বাবার তৃতীয় সন্তানকে উপস্থিত করাতে রিট

বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের ছোট মেয়েকে আদালতে উপস্থিত করানোর নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। রিট আবেদনটি করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত শিশুটির বাবা আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফ।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে এটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে। ইমরান শরীফের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এ মাসের শুরুর দিকে ইমরান শরীফের তৃতীয় মেয়ের অবস্থান এবং আদালতে হাজিরের নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে ওই শিশু কোথায় আছে কিভাবে আছে, তা আমরা জানি না। তাই আদালতে হাজিরের পাশাপাশি ছোট মেয়ের সঙ্গে তার বাবার দেখা-সাক্ষাৎ করার সুযোগ চাওয়া হয়েছে।

এর আগে বড় ও মেজ মেয়েকে হাইকোর্টে উপস্থিত করানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন ইমরান শরীফের সাবেক স্ত্রী জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানো। এর প্রেক্ষিতে দুই মেয়েকে নিয়ে আসা হয়। এখন ঢাকার গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় দিন-রাত পর্যায়ক্রমে সন্তানদের দেখাশোনা করছেন তাদের বাবা-মা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর শিশুদের নিয়ে বাবা-মায়ের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ার আজ (২১ অক্টোবর) পর্যন্ত দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা দুই কন্যাকে নিয়ে গুলশানের ভাড়া করা বাসায় থাকার জন্য জাপানি মা নাকানো এরিকোকে অনুমতি দেন আদালত। এ সময়ে বাবা ইমরান শরীফ শুধু দিনের বেলা সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে ও অবস্থানের করার অনুমতি দেওয়া হয়।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ বাবার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। আর শিশুদের মায়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এদিকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর এ মামলা থেকে শিশুদের বাবার পক্ষের আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।

এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর এক শুনানিতে উভয়পক্ষ সমঝোতায় আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন আদালত। কিন্তু তারা সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। সমাঝোতা না হওয়ায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর আরো সময় দেন আদালত।

পরে বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সমঝোতার জন্য দুপক্ষের আইনজীবীরা আবার বৈঠক করেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর জাপান থেকে আসা সেই দুই শিশুকে গুলশানের বাসায় ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে মা-বাবার সঙ্গে থাকার অনুমতি দেন আদালত। এ সময়ের মধ্যে উভয়পক্ষ সমঝোতায় আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আদালত। আর এ সমঝোতা করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাবার পক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদকে। আর রোকনউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে এ বিষয়ে বসবেন মায়ের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির। তবে নির্ধারিত সময়ে দুপক্ষ আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি।

এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় থাকছে জাপান থেকে আসা ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই শিশু। গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টের একই বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন। এ আদেশের অংশবিশেষ সংশোধন চেয়ে কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে শিশুদের মা গত ৬ সেপ্টেম্বর আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর একই বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনা দেন। এতে দুই মেয়ের সঙ্গে চার রাত থাকা ও তাদের নিয়ে বাসার বাইরে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পান মা ও বাবা। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আজ ২১ অক্টোবর দিন ধার্য রাখেন হাইকোর্ট।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আদালত,রিট,জাপানি মা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close