ক্রীড়া ডেস্ক
যত ভয় কেনকে নিয়ে
রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরুতে ফেভারিটদের তালিকায় ছিল না ইংল্যান্ড। কারণটা অমূলক নয়। ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর প্রতিবার টুর্নামেন্টে ফেভারিট হিসেবে এলেও শিরোপাটা অধরা থেকে গেছে ইংলিশদের। এমনকি পার হতে পারেনি কোয়ার্টার ফাইনালের সেতুটাও। ডেভিড বেকহাম, ওয়েইন রুনি, স্টিভেন জেরার্ডদের নিয়ে গড়া ইংলিশদের সোনালি প্রজন্মটাও হতাশা উপহার দিয়েছে ইংলিশদের। কিন্তু এবার পূর্বসূরিদের পথে হাঁটেননি হ্যারি কেন, ডেলে আলিদের মতো তরুণ তুর্কিরা। কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের অধীনে ৩৮ বছর পর শেষ চারে উঠেছে থ্রি-লায়নসরা।
রাশিয়া বিশ্বকাপে ইংলিশদের এই সাফল্যের পেছনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হ্যারি কেন। মাঠে দলের আর্মব্যান্ডটাও থাকছে এই টটেনহাম ফরওয়ার্ডের হাতে। অথচ কেনের এটি প্রথম বিশ্বকাপ। আর অভিষেক বিশ্বকাপে এসেই ৬ গোল করে এখন পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকটাও এসেছে কেনের কাছ থেকে। অঘটন না ঘটলে বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুটের পুরস্কারটা যে তার হাতেই যাচ্ছে তা চোখ বন্ধ করে বলা যায়। কিন্তু তার পেছনে থাকা রোমেলু লুকাকোকেও হিসেবে রাখতে হচ্ছে। ৪ গোল করে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটাও জমিয়ে ফেলেছেন এই বেলজিয়ান ফরওয়ার্ড। দুইজনই চাইবে সেমিফাইনালে নিজেদের গোলসংখ্যাটা বাড়িয়ে নিতে।
১৯৮৬ বিশ্বকাপে ৬ গোল করে গোল্ডেন বুটের পুরস্কার জিতেছিলেন আরেক ইংলিশ ফুটবলার গ্যারি লিনেকার। পূর্বসূরির পাশে নিজের নামটা বসাতে প্রস্তুত আছেন কেনও। বিশ্বকাপটা ছুঁয়ে দেখতে হলে যে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে কেনকেই জ্বলে উঠতে হবে তা জানা আছে কোচ সাউথগেটের। এই ১.৮৮ মিটার লম্বা ও ২৪ বছর বয়সী ফরওয়ার্ডের সামর্থ্যরে কথাটা জানা আছে ইংলিশদের। স্পার্সদের হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের গত মৌসুমেই ৩০ গোল করেছিলেন কেন। অথচ মৌসুমের কয়েকটা মাস মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে তাকে। উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিস্বরূপ রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে তাকে দলে ভিড়াতে চেয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের মতো বিশ্বের সেরা ক্লাবও। কিন্তু কেন স্পেনে না গিয়ে টটেনহামের সঙ্গেই ৬ বছরের চুক্তিটা সেরে নিয়েছেন।
লুঝনিকির সেমিফাইনালে তাই আজ ক্রোয়েশিয়ার চিন্তার বিষয় হয়ে উঠতে পারেন কেন। কোচ জøাতকো দালিচের ভাবনাও তিনি। মাঠে তাকে ঠেকাতে দায়িত্বটা দিয়েছেন দেয়ান লভরেন। প্রতিপক্ষকে ঠেকানোর আগেই কেনের সামর্থ্যরে কথাটা স্বীকার করে নিয়েছেন এই ক্রোয়াট ডিফেন্ডার। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে লভরেন বলেন, ‘কেন বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন। প্রতি মৌসুমে সে ২৫টির ওপর গোল করে।’
সুইডেনের বিপক্ষে কেন গোল পাননি। অবশ্য মাঠে তাকে বোতলবন্দি করে রেখেছিল ইয়ান অ্যান্ডারসনের শিষ্যরা। তবে আজকে পুনরায় জ্বলে উঠার জন্য তাগিদে থাকবেন তিনি। কেননা দলকে যদি ফাইনালে তুলতে পারেন তবে ইংলিশ কিংবদন্তিদের কাতারে নামটা লিখিয়ে ফেলবেন কেন। জর্জ বেস্ট, ববি চার্লটনদের পাশে বসার জন্য নিশ্চয় মুখিয়ে আছেন তিনি।
"