মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি

  ২৫ জুলাই, ২০১৭

জমি দখল করে ভিটে ছাড়া করার অভিযোগ

চাকরির ৮ বছরেই হয়েছেন বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক। বাড়ী-গাড়ি, নামিদামি ফ্ল্যাটসহ বিলাসী জীবনযাপনের সব উপকরণ গড়ে নিয়েছেন। যেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। এ ছাড়াও অভিযোগ রয়েছে জমি দখল, প্রতিপক্ষের উপর হামলা, মামলা দিয়ে হয়রানিসহ র‌্যাব, পুলিশের ভয় দেখানোর। এসব অভিযোগ চাঁদপুরের উত্তর মতলবের দুর্গাপুর গ্রামের কাউছার আহম্মেদ মানিকের বিরুদ্ধে।

কাউছারের ভয়ে অন্যদের মতো তার আপন চাচা অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা বজলুর রহমান ওরফে সুরুজ মিয়া ও তার পরিবার জায়গা-জমি, পৈত্রিক ভিটি সম্পত্তি ছেড়ে দীর্ঘদিন যাবত ঢাকায় আত্মগোপন করে আছেন। কাউছার অহম্মেদের এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি হলেও রিপোর্টটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

কাউছার আহমেদ মানিক চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলব দুর্গাপুর খালপাড়ের হামিদ উল্লাহ প্রধানের বাড়ীর ফজলুল হক ওরফে চাঁন মিয়ার বড় ছেলে। ছয় ভাই বোনের মধ্যে মানিক সবার বড়। তিনি বিটিআরসির সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং বর্তমানে অ্যাসিসট্যান্ট ডাইরেক্টর হিসাবে কর্মরত আছেন। ২০০৮ সালে শর্তসাপেক্ষে বিটিআিসিতে চাকরি নেন। শর্ত ছিলো এলএলবি সার্টিফিকেট জমা দিলে তার চাকরি স্থায়ী হবে। তা না দিয়ে বিভিন্ন মহলে তদবির করে চলতি জুলাই মাসে তিনি প্রমোশন নেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৯০ এর দশক থেকে এলাকার ৪ নম্বর খতিয়ানের ১২ একর সম্পত্তি নিয়ে মানিকের দাদা দুখাই প্রধান এবং তাদেরই আত্মীয় ছবত আলী প্রধানের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে মৌরশী সম্পত্তি বিরোধের জেরে ছবত আলী বাদী হয়ে ১৯৯৬ সালে দুখাই প্রধান ও গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। ১৯৯৯ সালে আদালত ওই মামলায় ৪ একর ৮৮ শতাংশ সম্পত্তির দাবীদার হিসাবে বিবাদী দুখাই প্রধান মামলার রায় পান। ২০০০ সালে ছবত আলী প্রধান আপীল মামলা করলেও ২০০৮ সালে আপিল খারিজমূলে মামলার বিবাদীপক্ষ দুখাই প্রধানের পক্ষে রায় বহাল থাকে। এরই মধ্যে দুখাই প্রধানের মৃত্যুর পর তার ছেলে ফজলুল হক চাঁন মিয়া এবং ছবত আলী প্রধানের মৃত্যুর পর তার ছেলে সফিকুল ইসলাম পুনরায় মামলা শুরু করেন।

জানা গেছে, ছবত আলীর মৃত্যুজনিত কারণে সকলের পক্ষে তার ছেলে সফিকুল ইসলাম খারিজ মামলা পুনরুজ্জীতের জন্য সম্প্রতি আপিল রিভিউ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিচারাধীন থাকলেও ৪ একর ৮৮ শতাংশ এর মধ্যে ৩ একর ২৬ শতাংশ সম্পত্তি দখলে নেন মানিক ও তার বাবা ফজলুল হক চাঁনমিয়া।

সম্পত্তি দখল হওয়ার পর এর ওয়ারিশি মালিকানা দাবিদার মানিকের চাচা বজলুর রহমান সুরুজ মিয়া চরম বিপাকে পড়েন। বিষয়টি সহনীয়ভাবে সুরাহা করতে না পেরে মানিকের কর্মকান্ডের প্রতিকারের দাবী করে বজলুর রহমান ২০১২ সালের আগস্টে বিটিআরসির উর্ধ্বতনদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি তদন্তের জন্য মো. আব্দুল হাকিম, পরামর্শককে (রেগুলেটরী অ্যাফেয়ার্স) তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। সাত কার্যদিবসরে মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। একই বছরের ২ অক্টোবর কাওসার আহমেদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত কাজ শুরু করে। বিটিআরসি অফিস নির্দেশে বলা হয়, জনাব মো. বজলুর রহমান বিটিআরসি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদের বিরুদ্ধে ভুয়া র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয়ে ভয়-ভীতি প্রাণনাশের হুমকি ও জালিয়াতির মাধ্যমে পৈত্রিক ভূমি আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর তদন্ত কার্যক্রম শুরু হলেও তা আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। বরং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিযোগকারীর নাম জেনে কৌশলে সুরুজ মিঞার ছেলেকে

জঙ্গী বানিয়ে আইন শৃংখলা বাহিনীকে দিয়ে গ্রেফতার, হয়রানিসহ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কাওছার আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist