ইবি প্রতিনিধি

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

সিনিয়র-জুনিয়র কোন্দলে ইবিতে সংঘর্ষ, আহত ৮

সিনিয়রকে জুনিয়রদের মারধর করাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষ ঘটে।

এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের আটজনেরও বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জেবিয়ারকে বন্ধু ভেবে পেছন থেকে ডাক দেন আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী কামাল হোসেন। পরে জেবিয়ার সেখানে গেলে ভুল বুঝে ডাকার কারণে দুঃখ প্রকাশ করেন কামাল। এ সময় কামাল দুঃখ প্রকাশ করার পরও জেবিয়ার কামালের ওপর কিছুটা চড়াও হন। এ সময় জেবিয়ার কামালকে শাসান এবং পরে দেখা করতে বলেন। এরপর কামাল তার বন্ধুদের নিয়ে জিয়া হলে (১২৭) জেবিয়ারের সঙ্গে দেখা করতে যায়। এ সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জেবিয়ারকে মারধর করে কামাল ও তার বন্ধুরা। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতারা ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি সমাধান করেন।

জিয়া হলের ২০৮ নম্বর রুমে কামাল অবস্থান করছে সংবাদ পেয়ে জেবিয়ার তার বন্ধু ইমতিয়াজ, জয়, সালমান, হামজাসহ প্রায় ১০-১৫ জন কর্মী নিয়ে তার রুমের সামনে যায়। এ সময় কামাল রুম থেকে বের হলে তারা দরজায় লাথি দেয় এবং জানালার গ্লাস ভাঙচুর করেন।

তখন কামালকে না পেয়ে তারা হল থেকে বের হয়ে আসলে জিয়া মোড় এলাকায় জিয়া হলসহ অন্যান্য হলে থেকে আসা কামালের গ্রুপের কর্মীদের সঙ্গে জেবিয়ারের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় উভয় কর্মীদের হাতে লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়।

এ সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের প্রায় ৮-১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে হিমেল চাকমা নামের এক কর্মীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। সংঘর্ষের সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও পরে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান এবং সংঘর্ষ শেষ হলে আসেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে আসি। ছাত্রলীগের নেতারা নিজেরাই বিষয়টি সমাধান করায় আমরা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’

দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে পুলিশ ঘটনাস্থল কেন আসল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ফোর্স প্রধান ফটকে প্রস্তুত ছিল। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তারা ঘটনাস্থলে আসেনি।’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিপ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমাদের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। আমরা ফোর্স নিয়ে প্রধান ফটকের সামনে ছিলাম, কিন্তু ঘটনাস্থলে যায়নি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close