গাজী শাহনেওয়াজ

  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

পর্যটন নগরী সেন্টমার্টিন যেতে চালু হচ্ছে নৌ মন্ত্রণালয়ের চার রুট

সরাসরি চলবে সিক্রুজ; খুলনা-বরিশাল-ঢাকা-কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন

পর্যটন নগরী সেন্টমার্টিন যেতে নিরবচ্ছিন্ন নৌরুট চালু করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। দেশের চারটি বিভাগীয় শহর থেকে সরাসরি নৌপথে যাওয়া যাবে ওই দ্বীপ নগরীতে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলবে সিক্রুজগুলো। যার তত্ত্বাবধায়ক নৌ মন্ত্রণালয়ের অধীনের বিআইডব্লিউটিসি। রুটগুলো হচ্ছে ঢাকা-সেন্টমার্টিন, খুলনা-সেন্টমার্টিন, বরিশাল-সেন্টমার্টিন এবং কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন।

পর্যটকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে দ্রুত এ সেবা চালু করতে চায় মন্ত্রণালয়। তারা চাচ্ছে, আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের দিকে এই সেবা চালু করতে। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের অভিমত, বিআইডব্লিউটিসির নির্মাণাধীন ২টি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ নির্মাণের পর একযোগে সেবা চালু করা। সম্প্রতি নৌ মন্ত্রণালয়ের এক কার্যপত্র থেকে এ তথ্য মিলেছে।

জানতে চাইলে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুস সামাদ বলেন, পর্যটকদের কাছে সেন্টমার্টিন একটা আকর্ষণীয় ভ্রমণের স্থান। কিন্তু সেখানে পৌঁছাতে দেশের বিস্তৃত এলাকার সঙ্গে সরাসরি কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। ফলে অনেকের ইচ্ছা থাকার পরও মন চাইলেই বিনোদন নগরী সেন্টমার্টিনে যেতে পারেন না। কারণ সারা দেশের মানুষকে সেন্টমার্টিনে যেতে হলে প্রথমে কক্সবাজার পরে সেখান থেকে সড়কপথে টেকনাফ হয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিশেষ জাহাজে যেতে হয়। এটা ভ্রমণপিপাসুদের কাছে অনেকটা পীড়াদায়ক। এসব সার্বিক দিকবিবেচনা এবং পর্যটনে মানুষকে বাড়তি অনুপ্রেরেণা জোগাতে সরাসরি চারটি রুটে নৌমন্ত্রণালয়ের সিক্রুজ সেবা চালুর চিন্তাভাবনা চলছে। মন্ত্রণালয় চাচ্ছে, চলতি বছরের মধ্যে এ সেবা চালু করতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমুদ্র বেষ্টিত দ্বীপ নগরী সেন্টমার্টিন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় নানা কারণে। একপাশে বাংলাদেশ অন্যপাশে মিয়ানমার, মাঝখান দিয়ে নাফ নদী। এরই মধ্যে দিয়ে সেন্টমার্টিন পৌঁছাতে হয়। সমুদ্রের দিগন্ত জোড়া নীল জল পর্যটকদের নজরকাড়ে।

তবে নয়নাভিরম এই দ্বীপ নগরীতে পর্যটকদের জন্য শীত মৌসুম উত্তম। বর্তমানে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে প্রতিদিন সকাল থেকে আসা-যাওয়া করে সি-ট্রাক, কেয়ারি সিন্দাবাদ এবং নাফসি হাজাজ। চমৎকার এসব জাহাজের পাশাপাশি ট্রলারও চলাচল করে এই সমুদ্র রুটে। পছন্দসই অন্য বাহনেও যেতে পারেন। তবে নিরাপদ জলযান হিসেবে কেয়ারি সিন্দাবাদ ও নাফসি জাহাজই নির্ভরযোগ্য। এসব জাহাজে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে সময় লাগে ২ ঘণ্টা। অন্যদিকে প্রতিদিনই বিকেল ৩টায় এসব জাহাজ সেন্টমার্টিন ছেড়ে আসে। শীত মৌসুমে সমুদ্র শান্ত থাকে এবং গ্রীষ্ম-বর্ষা মৌসুমে সমুদ্র উত্তাল থাকে তখন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ।

পর্যটকদের বাড়তি ব্যয়-সময়-সড়কের যানজট এড়িয়ে নির্বিঘেœ সেন্টমার্টিন যেতে সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সিক্রুজ সেবা চালু করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে চলাচলের সীমারেখা নির্ধারণ করেছে। এর নেতৃত্বে রয়েছে পর্যটকবান্ধক ক্ষমতাসীন সরকারের নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজান খান। তার সুদূরপ্রসারি চিন্তার মাধ্যমে অলাভজনক বন্দরে সুদিন ফিরেছে। চালু হয়েছে অকেজো বন্দরগুলো। ফলে দেশের অর্থনীতির গতিকে সচল রাখতে বড় ভূমিকা রাখছে এই মন্ত্রণালয়।

এর ক্ষেত্র বাড়াতে সেন্টমার্টিনে সরাসরি ভ্রমণপ্রেমীদের পৌঁছে দিতে দেশের চারটি স্থান থেকে সিক্রুজ চলাচলের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। রুটগুলো হচ্ছে খুলনা-বরিশাল-ঢাকা-কক্সবাজার থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন। এই দ্বীপে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করে তুলে বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ। তার প্রযোজনায় নির্মিত ‘দারুচীনির দ্বীপ’ চলচ্চিত্র পর্যটকদের কাছে বাড়তি আকর্ষণীয় হয়ে আছে। এবার দেশের সংশ্লিষ্ট স্থানগুলো থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া উদ্যোগ পর্যটকদের কাছে বাড়তি অনুপ্রেরণার উৎস হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছর থেকে নৌপথ ধরে পর্যটকরা সরাসরি সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close