নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৯ এপ্রিল, ২০১৮

চার দেশ থেকে আনা হবে ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিপুল সাফল্য এলেও বাস্তবতা হচ্ছে এখনো বৈদ্যুতিক আলোর সুবিধা দেশের প্রতিটি ঘরে পৌঁছেনি। সারা দেশের চাহিদার তুলনায় উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমাণ কম হওয়াই এর মূল কারণ। এ সমস্যা কাটাতে এবং শিল্প-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বেশি করে বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা করছে সরকার। সার্কভুক্ত দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে ক্রসবর্ডার ইলেক্ট্রিসিটি ট্রেড বা আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্যের প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে শুরুর চেষ্টা চলছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিবেশী চার দেশ ভারত-মিয়ানমার- নেপাল এবং ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে প্রতিবেশী চার দেশের কাছ থেকে নয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ আমদানির সঙ্গে এসব দেশের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে যৌথ বিনিয়োগেও আগ্রহী বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর মধ্যে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বা আট হাজার কোটি টাকা প্রতিবেশী দেশের জলবিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছেন। সরকারের লক্ষ্য সফল করতে নেপাল ভুটান এবং ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা চলছে। একইসঙ্গে ভারতে যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে, সেখান থেকেও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ কিনবে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ অপরিহার্য। এই বিদ্যুৎ শুধু দেশে উৎপাদন করেই হবে না। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আমদানির চিন্তা করছে সরকার। এ জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এতে শুধু বিদ্যুৎই আসবে না পাশাপাশি দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।

জানা যায়, ২০২০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। পর্যায়ক্রমে যে প্রবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে, তাতে ২০২১ এ বিদ্যুৎ আমদানি বেড়ে দাঁড়াবে দুই হাজার মেগাওয়াট, ২০২৫-এ দুই হাজার ৫০০ মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট আর ২০৩৫ সালে সাত হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালে দাঁড়াবে নয় হাজার মেগাওয়াট।

পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, যৌথভাবে ভুটানের কুরি-১ প্রকল্পে বাংলাদেশ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। ভারত এবং নেপাল এবং বাংলাদেশ প্রকল্পটির সমান অংশীদার হবে। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এক হাজার ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। এছাড়াও দেশটিতে গামারি-১ এর ৪৫ মেগাওয়াট এবং গামারি-২ এর ৮৫ মেগাওয়াট, নায়েরা আমারি-১ এ ১২৫ এবং নায়েরা আমারি-২ এ ৩১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ যুক্ত হতে পারে। জাইকা এসব প্রকল্পের সমীক্ষা করছে বলে তিনি জানান।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ভুটানের জিএমআর এর প্রকল্প থেকে বাংলাদেশ ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে। এখন আমদানির বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আপার কারনালি-৯০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র নির্মাণ করছে জিএমআর। এছাড়া ভুটানের অন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আমদানির চেষ্টা করছে। ভুটান বেসরকারিভাবে কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। এদিকে, মিয়ানমারেও ৪০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখন তারা ১০ হাজার মেগাওয়াটের কেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist