মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরায় পাঁচতলা থেকে পড়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীর মৃত্যু
মাগুরা শহরের নতুন বাজার থেকে গতকাল শনিবার সকালে গোবিন্দ ভট্টাচার্য (৩০) নামের এক ভারতীয় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একটি ভবনের পাঁচতলা থেকে পড়ে তিনি মারা যান। গোবিন্দ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতের মধ্যমগ্রাম এলাকার ধীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, সকাল ৮টার দিকে ওই এলাকার কাজী টাওয়ারের পঞ্চম তলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর থেকে দড়ি বেয়ে নিচে নামতে গিয়ে তিনি পড়ে যান। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় গোবিন্দর ব্যবসায়িক অংশীদার মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামের সরফরাজ নেওয়াজকে (৩২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। ব্যবসায়িক কারণে গোবিন্দর কাছে সরফরাজ প্রায় আট লাখ টাকা পান। ওই টাকা আদায়ের জন্য তাকে ওই বাসায় আটক করে রাখা হয়েছিল। সকালে সেখান থেকে পালাতে গিয়ে গোবিন্দের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
ভবনের তত্ত্বাবধানকারী নুরুল আমিন সকালে বলেন, তিন দিন আগে সরফরাজ ও তার বন্ধু ভারতীয় নাগরিক গোবিন্দ শহরে সামির কাজী টাওয়ার নামের ছয়তলা ওই ভবনের পাঁচ তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। বাড়ি ভাড়ার ফরম পূরণ করে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত তারা জমা দেননি। সরফরাজের বাড়ি ওই ভবন থেকে অল্প দূরে।
আটকের পর সকালে সরফরাজ বলেন, ‘আমি ঢাকায় থাকি। তৈরি পোশাকের ব্যবসা করি। ব্যবসায়িক কারণে ছয়-সাত মাস আগে ভারতীয় ব্যবসায়ী গোবিন্দর সঙ্গে ঢাকায় আমার পরিচয় হয়। তার সঙ্গে ব্যবসা করছিলাম। এখন প্রায় আট লাখ টাকা পাব। ওই টাকা না দিয়ে তিনি ঘোরাচ্ছিলেন। ছয় দিন আগে তিনি মাগুরায় এসে আমার বাড়িতে ওঠেন। পরে ওই ভাড়া বাড়িতে ওঠেন। গোবিন্দ টাকা আনার জন্য ভারতে তার বাড়িতে যোগাযোগ করছিলেন। রাতে দুজন ঘুমিয়ে ছিলাম। সকালে পুলিশ এসে আমাকে ডেকে তোলে।’
মাগুরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) হোসেন আল মাহবুব বলেন, ‘আমরা সকালে গিয়ে সরফরাজকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেয়েছি। ভারতীয় ওই ব্যক্তি পালাতে গিয়ে মারা গেছেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরাও তা-ই বলেছেন। ওই ব্যক্তিকে ভেতরে বেঁধে রাখারও কোনো আলামত পাইনি। বেঁধে রাখলে তিনি পালাতে পারতেন না। তবে সেখানে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য তাকে আটকে রাখা হয়েছিল, এমন তথ্য পাওয়া গেছে।’
সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সরফরাজকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়নি। ওই ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক হলেও পাসপোর্ট, আইডি কার্ড বা তার কোনো বৈধ কাগজপত্রও পাওয়া যায়নি। তার খোঁজ নিতেও কেউ আসেনি।
"